
গোটা বিশ্বে বেড়েই চলেছে খাবারের চাহিদা। চাহিদার সাথে পাল্ল্লা দিয়ে উৎপাদন সেভাবে বাড়ছে না কিন্তু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নষ্ট হচ্ছে প্রায় টো শতাংশ খাবার। আপনি কি জানেন প্রতিবছর কত খাবার নষ্ট হচ্ছে বিশ্বে? কত মানুষ না খেয়েই দিনের পর দিন অতিবাহিত করছে তাঁদের জীবন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর হিসাব অনুযায়ী, এর পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ কোটি কেজি। সংস্থা অনুযায়ী, এই নষ্ট খাবারের পরিমাণ বিশ্বে মোট উৎপাদিত খাদ্যের এক তৃতীয়াংশ । যা দিয়ে প্রতিবছর পেট ভরে খাওয়ানো সম্ভব প্রায় ২০০ কোটি মানুষকে।
একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও এখনও প্রায় আশি কোটি এগারো লক্ষ মানুষ প্রতিদিন অভুক্ত অবস্থায় ঘুমোতে যান। এবং এই অপুষ্টিতে আক্রান্ত মানুষের এক-চতুর্থাংশের বাসই ভারতে। পৃথিবীতে প্রতি তিন জন অপুষ্ট শিশুর একজন ভারতের। এখনও অনাহার,খাদ্যাভাব ও অপুষ্টি আমাদের দেশের মানুষের নিত্য সঙ্গী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন’ (এফএও)-এর ২০১৮-র সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতের শতকরা ১৪.৮ জন, প্রায় ১৯ কোটি ৫৯ লক্ষ মানুষ অপুষ্টির শিকার। এ দেশে উৎপাদিত খাদ্যের শতকরা ৪০ ভাগই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোনও না কোনও ভাবে। এই অপচয় হয়ে যাওয়া খাদ্যের পরিমাণ প্রায় ৬.৭ কোটি টন। ভারতে খাদ্য অপচয়ের এক অন্য়তম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কারনে অকারনে খাবার নষ্ট করা।
ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট ২০২১ অনুযায়ী, ৫৪টি দেশে সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে যে দেশের বেশিরভাগ খাবার নষ্ট হয় বাড়ি বা রেস্তোরাঁয় বান্না করা খাবার অপচয়ের ফলে। এই সমস্ত রেস্তোরাঁ, বা খাবারের দোকান থেকেই ২৬% খাবার নষ্ট হয়। মুদির দোকানগুলি উৎপাদিত খাদ্য বর্জ্যের পরিমান ১৩%। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে ভারত খাদ্যের অপচয়ের পরিমাণটি দিন দিন আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে। জানলে অবাক হবেন, প্রতি বছর বিশ্বে যত খাদ্য নষ্ট হয় তা উৎপাদন করতে ব্যবহৃত হয় ১.৪ বিলিয়ন হেক্টর জমি বা প্রায় ৩৪৬ কোটি একর জমি যা বিশ্বের মোট কৃষি জমির ২৮ শতাংশ। ইন্টারন্যাশানাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচালরাল ডেভেলপমেন্ট (IFAD) এর প্রধানের কথায়, সম্পদের অভাব নয় বরং খাদ্য অপচয়ই সারা বিশ্বে ক্ষুধার প্রধান কারণ। এই অবস্থায় খাদ্যের অপচয় মানে কোটি কোটি ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার থেকে বঞ্চিত করা।
সূত্র: জি নিউজ