বিশেষ: নাপিত থেকেই , নিজের প্রচেষ্টায় এখন ১৭ হাজার কোটি টাকার মালিক!

নাপিত থেকে যেভাবে হলেন ১৭ হাজার কোটি টাকার মালিক! – রমেশ বাবু। বিশ্বের সেরা ধনী নাপিত। ভারতে ধনীদের তালিকায় তার অবস্থান ৬৮ তম। দরিদ্র রমেশ প্রতিভা ও সঠিক সি’দ্ধান্তের জোরে দরিদ্র থেকে অসম্ভব সচ্ছল জীবন পার করছেন। বর্তমানে দুই বিলিয়ন ইউএস ডলারের মালিক তিনি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। তার ৩৭৮ দামি গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১২০টি বিলাসবহুল গাড়ি। সেই রমেশ বাবুর জিরো থেকে হিরো হওয়ার সাফল্যের গল্প আজ পাঠকদের সামনে তুলে ধরব। ১৯৭৪ সালে ভারতের বে’ঙ্গালুরে এক সেলুন ব্যবসায়ীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন রমেশ বাবু।

সাত বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে আর্থিক অভাবে পড়েন ছোট্ট রমেশ। বয়স কম থাকায় বাবার সেলুন ব্যবসায় হাত ধ’রার সক্ষমতা ছিল না তার। বাবার সেলুনের দোকানটি মাসিক পাঁচ টাকায় এক চাচার কাছে ভাড়া দেন তার মা। কিন্তু আর্থিক সংকট তাদের পিছু ছাড়ল না। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই নন্দিনী নামের একজনের বাড়িতে কাজে যান রমেশের মা। দরিদ্র রমেশ ক্যারিয়ারের শুরুতে পত্রিকা ও দুধ বিক্রির মাধ্যমে প্রতি মাসে ১০০ রুপি আয় করতেন। পাশাপাশি চালিয়ে যান লেখাপড়াও। রমেশ যখন ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে উঠেন, তখন চূড়ান্ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। তবে হাল ছাড়েননি।

পরে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারে ডিপ্লোমা করেন। মনে ছিল, বড় কিছু করে পরিবারের অভাব দূর করার। কিন্তু রমেশ ১৮ বছর বয়সেই বাবার সেলুন ব্যবসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন।শিক্ষিত রমেশ অল্প সময়ে ভালো ব্যবহার ও তরুণদের হেয়ার স্টাইলিস্ট হিসেবে পরিণত হন। সকাল ৬ টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতেন তিনি। টানা চার বছরের পরিশ্রমে মোটা অংকের টাকা জমা হয়। তাই ১৯৯৩ সালে শখের বশে ব্যাংক লোনের মাধ্যমে মা’রুতি ওমনি নামের একটি মাইক্রোবাস কেনেন। যেখানেই তার সফলতার বীজ লুকিয়ে ছিল। রমেশ বাবু বলেন, নিজের ব্যবহারের জন্য মাইক্রোবাসটি কিনেছিলাম।পাশাপাশি সেলুন ব্যবসাও পরিচালনা করতাম। কিন্তু ব্যাংক লোনের টাকা ঠিকমতো পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। এক পর্যায়ে দুই মাসের লোনের টাকা জমা পড়ে যায়।

তখন নন্দিনী নামের ভদ্রমহিলা গাড়িটি ভাড়া দেয়ার পরামর’্শ দেন। এতে রেন্ট-এ কারের ব্যবসার ধারণা আবি’ষ্কার করি। এরপর মাইক্রোবাসটি ভাড়া দেয়া শুরু করি। মাঝে মাঝে নিজেও যাত্রীদের সেবা দেই। স’ঙ্গে নিজের সেলুন ব্যবসাটিও চালু পরিমাণ অর্থে ভাড়া দিচ্ছি। এছাড়া ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করি। তিনি আরো বলেন, আমি এতো টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও সেলুন ব্যবসা চালু রেখেছি। মাত্র ১৫০ রুপিতে এখনো আমা’র কাছে চুল কাটতে পারবেন। কিন্তু সব সময় হয়তো পাবেন না। কারণ, আমি শখের বশে চুল কাটছি। রমেশ বলেন, লক্ষ্য স্থীর থাকলে জীবনে সাফল্য পাওয়া সহজ। স্থীর লক্ষ্য করে কঠোর সাধনা করলেই সাফল্য হাতের মুঠোয় চলে আসে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy