বিশেষ: অল্প পুঁজিতেই ১০টি নতুন ব্যবসার আইডিয়া, অধিক লাভ করুন কম ঝুঁকি নিয়ে

অল্প পুঁজিতে করা যায় এমন ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে থাকেন অনেকেই। প্রথম দিকে অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করাটাই অধিক বুদ্ধিমানের কাজ। যদিও ব্যবসা করতে গেলে, অবশ্যই ঝুঁকি নিতে হয়। তবে, কম পুঁজির ব্যবসায় ঝুঁকি কম থাকে বলে, সবাই কম পুঁজিতে ব্যবসা করতে চায়।

অল্প পুঁজিতে ব্যবসা সাধারণত ১ কোটি টাকার নিচের ব্যবসাকে বোঝায়। পুঁজির পরিমাণ অল্প হলেও লাভের পরিমাণ কিন্তু অনেক বেশি। অল্প পুঁজির এমন কিছু ব্যবসা আছে যার মাধ্যমে বড় ব্যবসায় রূপান্তর করা সম্ভব। আজকে আমি এমন কিছু ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করবো, যাকরতে খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না। এসব ব্যবসার ঝুঁকির পরিমাণও অনেক কম। আমি ১০টি ব্যবসায় আইডিয়া শেয়ার করছি, এখন পছন্দ আপনার। জেনে নিতে পারেন, কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায়।

1. নার্সারি:
নার্সারি শব্দটি শুনলে মনে হতে পারে, এসব আবার ব্যবসা হল নাকি! আসলে পুরানো ধাঁচের নার্সারি না করে একটু স্মার্ট পদ্ধতি করলে খুব সহজে লাভবান হতে পারবেন। বর্তমানে শহরের অধিকাংশ মানুষ ফ্লাটে, বারান্দায়, ছাদে টবে ফুল, ফল কিংবা বনসই জাতীয় গাছ লাগায়। গ্রাহক চাহিদা আছে এমন গাছ নির্বাচন করে তার নার্সারি করেন। তাহলে বিক্রির পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া বিলাসবহুল বনসই, অর্কিড কিংবা ফল-ফুলের নার্সারি করের অধিক টাকা আয় করতে পারবেন। গ্রামে থাকলে নার্সারি করা অনেক সহজ। কিন্তু শহরের হলে সহজের পাশাপাশি আয়ের পরিমাণও বেশি থাকবে। শহরের ক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার নিজের বাসার ছাদে কিংবা অন্যের বাসার ছাদ ভাড়া নিয়ে কাজ করেন, তাহলে শহরেরই বিক্রি করতে পারবেন দ্রুত। বর্তমানে বিভিন্ন বৃক্ষ মেলা হয়, যেখানে অনেক লাভের বিনিময় গাছ বিক্রি করা সম্ভব।

2. অনলাইন টিউশনি:
নতুন ব্যবসার আইডিয়া যাদের মেধা ভাল এবং শিক্ষকতার অভ্যাস আছে তারা চাইলে অনলাইনে শিক্ষকতা করতে পারেন। অনলাইনে শিক্ষকতা করার জন্য খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই। একটি ভিডিও ক্যামেরা এবং একটি ভাল মাইক্রোফোন হলেই শুরু করে দেয়া সম্ভব অনলাইন টিউশনি। ফেসবুক পেজ, ফেসবুক গ্রুপ, ইউটিউব সহ অনেক মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতে আপনার ভিডিও আপলোড দিয়ে টিউশনি করাতে পারেন। ভিউ বৃদ্ধি পেলে ফেসবুক বা ইউটিউবকোম্পানি আপনাকে টাকা প্রদান করবে। এছাড়া আপনার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলে, প্রি-পেমেন্ট পদ্ধতিতে অনলাইনে লাইভ ক্লাস নিতে পারেন।

3. দর্জি:
গতানুগতিক ভাবে নয় বরং আপনি স্মার্ট পদ্ধতিতে দর্জি ব্যবসা করতে পারেন। এটা অনলাইন এবং হোম ডেলিভারি ভিত্তিক হতে পারেন। মানুষ অনলাইনে অর্ডার করবে আপনি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাপ ও কাপড় নিয়ে আসবেন। এছাড়া নতুন নতুন আকর্ষণীয় ডিজাইনের কাপড় তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। দর্জির কাজ করতে খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই। আর দর্জির চাহিদা সারা বছরই থাকে এবং বিভিন্ন উৎসবে এর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

4. হস্তশিল্পের ব্যবসা:
হস্তশিল্পের চাহিদা যুগ যুগ ধরে রয়ে গেছে। শখের বসে কিংবা ঘর সাজানোর জন্য হলেও মানুষ হস্তশিল্প কিনে থাকে। আপনি চাইলে নিজেই তৈরি করে এই ব্যবসা করতে পারেন। অথবা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে পণ্য সংগ্রহ করে তা অনলাইনে কিংবা দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারেন।

5. টিকিট বুকিং:
টিকেট বুকিং সেবা বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি ব্যবসা। এই ব্যবসাটি করতে আপনাকে প্রথম দিকে একটু কষ্ট করতে হতে পারে এবং পরে এই কষ্ট অনেক কমে যাবে। প্রথম দিকে অনলাইনে মার্কেটিং এবং ট্রাভেল এজেন্সির সাথে চুক্তি করে নিতে পারেন। ফলে তাদের সকল ক্লাইন্টকে আপনি অনলাইনে টিকিট বুক করে দিবে। এতে করে সহজে অনেক ক্লাইন্ট পাবেন। বাস, ট্রেন কিংবা প্লেনের টিকিটের ব্যবসা করে আপনি সহজে লাখপতি হতে পারবেন।

6. কফি-শপ:
যেখানে মানুষের আড্ডা হয়, সেখানে কফি-শপের বিক্রি বেশি হয়। কফি-শপ দিতে খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না। দোকান ভাড়া সহ কয়েক লক্ষ টাকা বিনিয়োগে একটি পূর্ণাঙ্গ কফি-শপ করা সম্ভব। কফি-শপে কফির পাশাপাশি হরেক রকমের চা, সরবত, জুস রাখা যেতে পারে। এই ধরনের ব্যবসা দোকান না দিয়ে রাস্তায় গাড়িতে করেও বিক্রি করা সম্ভব।

7. পুরনো জিনিসের দোকান:
পুরনো জিনিসের দোকান দিলে খুব কম পুঁজিতে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। প্রথম দিকে আপনি পুরানো বই, পণ্য বিক্রি করতে পারেন। পুঁজি বাড়লে দুর্লভ পণ্য রাখতে পারেন, এসব পণ্যের চাহিদা অনেক। চাইলে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। আবার চাইলে অনলাইনেও আপনার পুরনো জিনিস বিক্রি করতে পারেন।

8. মোবাইল রি-চার্জের দোকান:
মোবাইল রি-চার্জের দোকান দিতে খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না। মাত্র কয়েক হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই শুরু করে দেয়া যায় মোবাইল রি-চার্জে দোকান। দোকান ব্যতীত শুধু একটি চেয়ার আর টেবিল দিয়ে বাহিরে বসেই করা যায় এই কাজ। আস্তে আস্তে মূলধন বাড়লে পরিসর বাড়ানো যায়।

9. লন্ড্রি:
লন্ড্রির চাহিদা মানুষের দৈনিক চাহিদার জিনিস। কাপড় ধোয়া কিংবা আয়রন করার জন্য লন্ড্রি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে। আপনি চাইলে এই ব্যবসাকে একটু স্মার্ট পদ্ধতিতে করতে পারেন। যেমনটা Bandbox করে থাকে। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম ডেলিভারি এনে আবার কাজ সম্পন্ন করে ফেরত দিতে পারেন। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পোশাক ভাড়া দেয়ার কাজটিও লন্ড্রি দোকান দিয়ে করতে পারেন।

10. হাতে তৈরি খাবার:
হাতে তৈরির খাবারের চাহিদা যুগ যুগ ধরে আছে। এই ধরণের ব্যবসা সবচেয়ে বেশি চলে শহরের দিকে। মানুষের কর্ম ব্যস্ততার কারণে অনেক কিছু ঘরে তৈরি করতে পারে না। আপনি সেসব খাদ্য নির্বাচন করে দোকানে তৈরি এবং বিক্রি করতে পারেন। পাশাপাশি অনলাইনে বিক্রির অপশন রাখতে পারেন।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy