
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত সরকার গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য একটি পথপ্রদর্শক উদ্যোগ নিয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা’র মাধ্যমে এখন থেকে কাউকে বিদ্যুৎ বিলের জন্য টাকা গুনতে হবে না। মূল্যবৃদ্ধির এই বাজারে সাধারণ মানুষের জন্য এটি একটি বড় স্বস্তির খবর। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি গ্রাহকদের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।
সৌর শক্তিতে বিদ্যুৎ বিলে ছাড়
‘পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা’র আওতায় গ্রাহকদের বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিল একেবারে শূন্য বা নামমাত্র হয়ে যাবে। ভারতে বর্তমানে বিদ্যুতের ৯০% কয়লা জ্বালিয়ে উৎপাদিত হয়, যা বায়ু দূষণের একটি বড় কারণ। প্রতি বছর এর জন্য লক্ষাধিক মানুষ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। এই পরিস্থিতি রুখতে সরকার সৌর শক্তির উপর জোর দিচ্ছে, যা পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই।
কীভাবে কমবে বিদ্যুৎ খরচ?
এই প্রকল্পে অংশ নেওয়া গ্রাহকদের বাড়িতে সোলার প্যানেল লাগানোর জন্য সরকার ৩০,০০০ থেকে ৭৮,০০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেবে। শুধু তাই নয়, প্যানেলের মাধ্যমে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলে গ্রাহকরা তা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কাছে বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ১০ লক্ষেরও বেশি পরিবার এই সুবিধা পেয়েছে এবং বছরে ১৮,০০০ টাকার বেশি সাশ্রয় করেছে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই স্কিমে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন।
কেন এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ?
বর্তমানে রান্নার গ্যাস, খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে সব জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের সিইএসসি (CESC) এলাকাগুলোতেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘পিএম সূর্য ঘর যোজনা’ গরীব ও মধ্যবিত্তের জন্য একটি বড় স্বস্তি নিয়ে এসেছে। এই প্রকল্প শুধু বিদ্যুৎ বিল কমাবে না, বরং পরিবেশ দূষণ কমাতে এবং সবুজ ভারত গড়তেও সাহায্য করবে।
কীভাবে আবেদন করবেন?
এই স্কিমে আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইনে করতে হবে। আবেদনকারীদের সরকারি ওয়েবসাইট pmsuryaghar.gov.in-এ গিয়ে নিজের রাজ্য, জেলা, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার নাম ও গ্রাহক নম্বর দিতে হবে। এরপর বিদ্যুৎ সংস্থার প্রতিনিধিরা বাড়িতে এসে সোলার প্যানেল স্থাপন করবেন। ভর্তুকির টাকা সরাসরি গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। আবেদনের পর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
এই প্রকল্প নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। উত্তরপ্রদেশের এক গ্রাহক বলেন, “এই স্কিমের জন্য আমার বিদ্যুৎ বিল শূন্য হয়ে গেছে। এখন অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করে মাসে কিছু টাকাও আয় করছি।” পশ্চিমবঙ্গের একজন বাসিন্দা জানান, “দাম বাড়ার এই সময়ে এটা আমাদের জন্য বড় স্বস্তি।”
সরকারের লক্ষ্য
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ১ কোটি পরিবারকে ৩০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুৎ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছি। এটি কেবল আর্থিক স্বস্তি দেবে না, ভারতকে সবুজ শক্তির পথেও এগিয়ে নিয়ে যাবে।” ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে এই প্রকল্পে ৭৫,০২১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
এই উদ্যোগ নিয়ে আপনার মতামত কী? নীচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না!