নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে তার শান্তিনিকেতনের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের একটি নোটিশ দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোববার অমর্ত্য সেনের বাসভবনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশ পৌঁছেছে। তবে অমর্ত্য সেন বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে তার বাসভবন থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতীচীর ঠিকানায় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ মার্চ অমর্ত্য সেন অথবা তার কোনও প্রতিনিধি যেন বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন বিল্ডিংয়ের কনফারেন্স হলে উপস্থিত থাকেন। সেখানেই ওই ‘বিতর্কিত’ জমি নিয়ে শুনানি হবে।
বিশ্বভারতীর চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন। তাই আইন মেনে তাকে কেন ওই জমি উচ্ছেদ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
অমর্ত্য সেনের এই জমি নিয়ে বিতর্ক বেশ পুরোনো। কিছু দিন আগে অর্থনীতিবিদ যখন শান্তিনিকেতনে ছিলেন, সে সময়ই তাকে একটি চিঠি দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, শিগগিরই ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিতে হবে। ওই নোটিশ ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়।
চিঠির জবাবে অমর্ত্য সেন পাল্টা দাবি করেন, ওই বাড়ির জমির একাংশ বিশ্বভারতীর কাছ থেকে লিজ নেওয়া, বাকি অংশ কেনা। এখন মিথ্যা কথা বলছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এর মধ্যে শান্তিনিকেতনে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করেন। প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদের হাতে জমির কাগজপত্র তুলে দেন তিনি। নিজেই বিএলআরও অফিসে গিয়েছিলেন মমতা। এর পর বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘এভাবে মানুষকে অপমান করা যায় না।’ হুঁশিয়ারি দেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার।
কয়েক দিন আগে তার বাবা আশুতোষ সেনের পরিবর্তে জমির লিজ হোল্ডার হিসাবে নিজের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলেন অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। এই বিষয়ে বোলপুর ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অমর্ত্য সেনের এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীরা। কিন্তু দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পরও এই সংকটের কোনও সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি তারা।