নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। দেশটির সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের এই তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ঘিরে দেশটির জনগণের অসন্তোষের লক্ষণ এই বিক্ষোভ। মঙ্গলবার কাঠমাণ্ডুর বিক্ষোভে কয়েকশ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এর আগে, সোমবার নেপালের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি নেপাল অয়েল করপোরেশন (এনওসি) পেট্রল এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি যথাক্রমে ১২ এবং ১৬ শতাংশ বাড়িয়েছে। এনওসির এই পদক্ষেপে দেশটিতে সব ধরনের পণ্যের ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নেপালের প্রধান বিরোধীদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (ঐক্যবদ্ধ মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) ছাত্র সংগঠন অল নেপাল ন্যাশনাল ফ্রি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের (এএনএনএফএসইউ) প্রায় ১০০ সদস্যকে কাঠমাণ্ডুতে সমাবেশে বাধা দেয় পুলিশ। পরে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
মূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বিক্ষোভে অংশ নেয়া গিরিশ থাগুন্না রয়টার্সকে বলেন, এটি সরকারের নিছক দায়িত্বজ্ঞানহীন একটি কাজ। এটি ভুল এবং অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।
কাঠমাণ্ডু পুলিশের কর্মকর্তা দীনেশ মাইনালি বলেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে এবং পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তবে এই ঘটনায় কেউ আহত হননি অথবা কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ বলেছে, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পর গণপরিবহন এবং পণ্যবাহী যানবাহনের ভাড়া ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নেপালের ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ক্রমবর্ধমান খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে। আর এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলার ঝুঁকিও বেড়েছে। দেশটিতে খুচরা পণ্যের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি মে মাসের মাঝামাঝিতে গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশটির সরবরাহ মন্ত্রী দিলেন্দ্র প্রসাদ বাডু সোমবার একটি সংসদীয় কমিটিকে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বৃদ্ধি এবং আমদানি করতে গিয়ে এনওসির ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ায় সহায়তার জন্য এই দাম বৃদ্ধির দরকার ছিল।