![](https://techinformetix.in/wp-content/uploads/2022/06/srilankan-women-1024x533.jpg)
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে গৃহকর্মী বা অন্যান্য শ্রমঘন কাজের জন্য যেতে ইচ্ছুক নারীদের বয়সসীমা তেইশ থেকে কমিয়ে একুশে নামিয়ে এনেছে শ্রীলঙ্কার সরকার। মঙ্গলবার দেশটির মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত পাস হয়েছে।
চরম অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বান্দুলা গুণাবর্ধনে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কেবিনেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে শ্রমভিত্তিক কর্মী হিসেবে যেতে ইচ্ছুক নারীদের বয়সসীমা ২৩ থেকে কমিয়ে ২১ করা হয়েছে; অর্থাৎ এখন থেকে ২১ বছর বয়সী যে কোনো শ্রীলঙ্কান নারী শ্রমভিত্তিক কাজের জন্য বিদেশ যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।’
শ্রীলঙ্কায় একসময় প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক নারীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমার কোনো আইনি বাধ্যবাধ্যকতা ছিল না; কিন্তু ২০১৩ সালে হৃদয় বিদারক ঘটনার জেরে প্রবাসে যেতে শ্রমকর্মী হিসেবে যেতে ইচ্ছুক নারীদের বয়সসীমা বেঁধে দেয় সরকার।
ওই বছর ১৭ বছর বয়সী এক শ্রীলঙ্কান কিশোরীর শিরচ্ছেদ হয়েছিল সৌদি আরবে। গৃহকর্মী হিসেবে সৌদিতে যাওয়া ওই কিশোরী যে বাড়িতে কাজ পেয়েছিল, সেখানে ওই বাড়ির একটি শিশুর দেখাশোনা করার দায়িত্ব ছিল তার।
কিন্তু শিশুটির হঠাৎ মৃত্যু হওয়ায় দায়িত্ব পালনের গাফিলতির অভিযোগে হতভাগ্য সেই কিশোরী শিরচ্ছেদের শিকার হয়। এই ঘটনায় শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে সরকার বাধ্য হয়ে প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক নারীদের বয়সসীমা নূনতম তেইশ বছর করে।
এতদিন পর্যন্ত এই নিয়ম চলে এলেও বর্তমানে শ্রীলঙ্কার যে পরিস্থিতি, তাতে অবশ্য বিদেশি মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথও খোলা ছিল না সরকারের সামনে।
কারণ,পূর্ববর্তী সরকারের গুরুতর অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও করোনা মহামারির জেরে ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর বর্তমানে ইতিহাসের সবথেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা।
বিদেশি মু্দ্রার রিজার্ভ না থাকায় জ্বালানি, খাবার এবং ওষুধের মত অতি-জরুরি পণ্যও আমদানি করতে পারছে না ভারত মহাসাগরের ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্রটি।
শ্রীলঙ্কার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে রেমিটেন্সের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই দেশটির ১৬ লাখ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত প্রতি বছর রেমিটেন্স থেকে ৭০০ কোটি ডলার যোগ হতো দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে।
২০২০ সালে করোনা মহামারির জেরে রেমিটেন্স খাতে ধস নামে। এখনও সেই ধসের ধাক্কা চলছে দেশটিতে।
সূত্র: এএফপি