দূষণ-যানজট কমাবে হোন্ডার ই-স্কুটার, আছে আরো কিছু ফিচার

অল্প দূরত্বে যাওয়া-আসার জন্য বড় গাড়ির চমৎকার বিকল্প হতে পারে হালকা ইলেক্ট্রিক বাইক ও স্কুটার। এটি চলাচলে ও পার্ক করতে জায়গা কম লাগায় শহুরে যানজট কমাতে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, তেমনি অবিশ্বাস্যভাবে কমাতে পারে পরিবেশ দূষণও।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দিনে মাত্র একটি ট্রিপের জন্য গাড়ির পরিবর্তে ই-স্কুটারের মতো ক্ষুদ্রযান ব্যবহার করলে একজন শহুরে বাসিন্দার মাধ্যমে বছরে গড় কার্বন নিঃসরণ আধা টন পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

এসব উপকারের খবর সারাবিশ্বে ই-স্কুটার ও এর নির্মাতাদের প্রতি অনেক বেশি আগ্রহ তৈরি করেছে। তবে একই সময়ে এ ধরনের ক্ষুদ্রযানের বেশ কিছু সমস্যা এবং সমালোচনাও উঠে এসেছে। যেমন- ২০১৮ সালের এক সমীক্ষায় বলা হয়, লুইসভিল-কেন্টাকির মতো জায়গাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টার্টআপ বার্ডের স্কুটারের গড় আয়ুষ্কাল এক মাসেরও কম। যদিও এ তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছে বার্ড কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া স্কুটার-সম্পর্কিত দুর্ঘটনা তো রয়েছেই। অস্থিতিশীল নকশা, রাস্তার অপ্রত্যাশিত অবস্থা এবং চালকের অনভিজ্ঞতার কারণে হালকা এসব যানবাহন চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এক জরিপে দেখা গেছে, ই-স্কুটার থেকে আঘাত পাওয়ার হার অন্য সব যানবাহনের তুলনায় ১৭৫ থেকে ২০০ গুণ বেশি।

ঠিক এই জায়গাতেই এগিয়ে যেতে পারে হোন্ডার ই-স্কুটার স্ট্রিমো। কারণ, এর প্রধান নজর সুরক্ষাতেই। তিন চাকার ক্ষুদ্রযানটি একবার চার্জ দিলে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যেতে পারে। রয়েছে সেলফ-ব্যালেন্সিংয়ের সুবিধাও। এটি তৈরি করেছেন হোন্ডার এক অভিজ্ঞ প্রকৌশলী।

স্ট্রিমোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী ইয়োতারো মোরি জানান, বিদেশে একই ধরনের পণ্য পরীক্ষা করে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা থেকে তিনি স্কুটারটি তৈরিতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

স্ট্রিমো প্রতিষ্ঠার আগে হোন্ডার মোটরসাইকেল গবেষণা ও উন্নয়নে এক দশকেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন মোরি। স্ট্রিমোর টেস্ট ইভেন্টে তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম, আমার টুলস ও ব্যাকগ্রাউন্ডের সাহায্যে আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারবো।

মোরি জানান, তিনি এই থ্রি-হুইলারটির নকশা করতে বছরের পর বছর সময় ব্যয় করেছেন। এখন প্রায় ৩০০টি স্কুটারের জন্য অর্ডার পেয়েছে স্ট্রিমো, যা প্রাথমিকভাবে জাপানের বাজারে ছাড়া হবে। ২০২৩ সালে ইউরোপে এবং তারপরে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

এই মুহূর্তে ইলেক্ট্রিক স্কুটারের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে। পরামর্শক ফার্ম ম্যাকিনসলের ধারণা, ২০৩০ সালের মধ্যে ইলেক্ট্রিক ক্ষুদ্রযানের বাজার ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার স্পর্শ করবে। তাছাড়া, দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছে ব্লুমবার্গএনইএফ।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy