মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দেশটির রাজধানী দিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে জুমার নামাজ শেষে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি বিক্ষোভ করেন।
এসময় বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা এবং দলটির সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তারা।
অন্যদিকে এনডিটিভি বলছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে বিশাল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মূলত বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা ও দলটির আরেক নেতা নবীন কুমার জিন্দালের বিতর্কিত মন্তেব্যের জেরে বিক্ষোভে অংশ নেন তারা।
বিজেপি এই দুই নেতাকে বহিষ্কার করলেও তাদেরকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও জানিয়েছে এনডিটিভি।
দিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদে মুসল্লিদের বিক্ষোভ নিয়ে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বরখাস্তকৃত বিজেপি নেতা নুপুর শর্মা এবং বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দালের বক্তব্যের বিরুদ্ধে জামে মসজিদে বিক্ষোভ করেছেন মুসল্লিরা। আমরা সেখান থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অন্যদিকে দিল্লির জামে মসজিদের শাহী ইমাম বলছেন, আমরা জানি না কারা প্রতিবাদ করছে, আমার মনে হয় তারা অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) তথা হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসির সমর্থক। আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, তারা এখানে প্রতিবাদ করতে চাইলে করতে পারে, কিন্তু আমরা তাদেরকে সহায়তা করছি না।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।
তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি অভিযুক্তদের মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। আর এর রেশ ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাইরের বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
অবশ্য এরপরই অনেকটা নড়েচড়ে বসে বিজেপি। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করে। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।