দিনে ৫ ঘণ্টার বেশি ফোন টিপছেন, সাবধান! হচ্ছে ভয়ঙ্কর বিপদ

সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে এমনিতেই মা-বাবার ভাবনার শেষ নেই। কৈশোরকে বিদায় দেওয়া, আর বড়দের দুনিয়ায় পা রাখার মধ্যবর্তীতে বয়ঃসন্ধির এই সময়টা বেশ জটিল। সন্তানদের দিকে তাই বাড়তি নজর রাখেন অভিভাবকরা। তবে শুধু ব্যবহারিক দিকে নয়, এবার থেকে নজর রাখুন ফোন ব্যবহারের দিকেও। সমীক্ষা বলছে, দিনে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় যদি সন্তান ফোনে ব্যস্ত থাকে, তবে তার মধ্যে বাড়তে পারে আত্মহত্যার ঝুঁকি। আজকাল তুচ্ছ কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় কিশোর-কিশোরীরা। সামান্য বকাঝকা, ফোনে খুটখুট করা নিয়ে অভিভাবকের সঙ্গে বিবাদ, কিংবা হেডফোন নিয়ে ঝামেলা- তার জেরে একেবারে আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে অল্পবয়সীরা। মারাত্মক এ প্রবণতা। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও।

জানা যাচ্ছে, ফোন ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে এই আত্মহত্যার ঝুঁকি। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক থমাস জয়েনার এ নিয়ে এক সমীক্ষা চালিয়েছেন। দেখা যাচ্ছে, ফোন ব্যবহারের সঙ্গে আত্মহত্যা বাড়ার সরাসরি যোগাযোগ আছে। ২০১০-২০১৫ এই সময়সীমার মধ্যে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে ৩১%। ডিপ্রেশন বেড়েছে ৩৩%। ৪৮ শতাংশ কিশোর কিশোরীদের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, যাদের স্ক্রিন টাইম দিনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি, তাদের মধ্যে আত্মহত্যা করার লক্ষ্মণও বেশি। এই সমীক্ষা থেকেই বোঝা যাচ্ছে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে বেশিমাত্রায় থাবা বসাচ্ছে এই রোগ। আর তার জন্য দায়ী মোবাইলই।

প্রযুক্তিনির্ভর সময়ে মোবাইল থাকাটা অন্যায় নয়। তা নিয়ে সময় কাটানোও অযৌক্তিকও নয়। কিন্তু ক্রমশ তা নেশার পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। যার যেরেই ডিপ্রেশন। ও আত্মহত্যার লক্ষ্মণগুলি ফুটে উঠছে। এই অবসাদ থেকে আত্মহননের গ্রাসে বেশি পড়ছে কিশোর-কিশোরীরাই। তারাই বেশিরভাগ সময় ফোনে কাটায়। দিনে স্বাভাবিক কাজকর্মের মধ্যে যেটুকু ফাঁকা সময় মেলে, তা কেটে যায় হয় ফোনে নয় অন্য কোনও ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটে। একেই স্ক্রিন টাইম বলা হচ্ছে। দিনে কোনও কিশোর যদি পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় এভাবে ব্যয় করে, তবে তার মধ্যেই এই সিনড্রোম বেসি মাত্রায় দেখা যায়।

গবেষকের পরামর্শ, সন্তানদের স্ক্রিন টাইম কমানোর চেষ্টা করতে হবে অভিভাবকদের। তবে তা তাড়াহুড়ো করে নয়। বকাঝকা করেও নয়। ধীরেসুস্থে বুঝিয়ে, অন্য কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে হবে। যাতে ফোনে মুখ গুঁজে থাকার মুদ্রাদোষ কেটে যায়।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy