দিনে কতবার প্রস্রাব করলে স্বাভাবিক ধরা হবে? কি জানাচ্ছে গবেষকরা

একজন সুস্থ মানুষ দিনে কতবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক? এই প্রশ্নটি প্রায়ই সেই সব মানুষের মনে আসে, যারা তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকেন।

এই প্রশ্নটিও ওঠে কারণ বন্ধুদের দলে কেউ কেউ বারবার টয়লেটে যায়, আবার কেউ কেউ টয়লেটে না গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে যারা প্রচুর জল পান করেন তারা অনুভব করতে শুরু করেন যে তাদের স্বাস্থ্যের কোনো সমস্যা নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস-সহ বিভিন্ন ধরণের দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিস রয়েছে। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে ইমিউন সিস্টেম প্যানক্রিয়াসের ইনসুলিন-উৎপাদনকারী বিটা কোষকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে দেয়। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে শরীর হয় পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে না, বা এটি ইনসুলিনকে প্রতিরোধ করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণের মধ্যে একটি হলো ঘন ঘন প্রস্রাব।

ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে তৈরি হয় অতিরিক্ত গ্লুকোজ। যে কারণে কিডনি বাধ্য হয়ে সেই অতিরিক্ত গ্লুকোজ ফিল্টার এবং শোষণ করে। কিন্তু একটা সময়ের পর এটি আর সম্ভব হয় না। তখন গ্লুকোজ নির্গত হয় প্রস্রাবের সঙ্গে। টিস্যু থেকে বেরিয়ে যায় অতিরিক্ত তরল। শরীর হয়ে পড়ে জলশূন্য। যে কারণে রোগীরা বেশি জল পান করলে ঘন ঘন প্রস্রাব করেন। নিউজ এইটিন এ প্রকাশিত এক খবরে এমনটাই বলা হয়েছে।

দিনে কতবার প্রস্রাব করলে স্বাভাবিক ধরা হবে?

একদিন অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির অন্তত ২ লিটার জল পান করা উচিত। সে অনুযায়ী সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক কারও জন্য দিনে ছয় থেকে আটবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক। প্রতিদিন চার থেকে দশবার প্রস্রাব করাও স্বাস্থ্যকর ধরে নেয়া যায়। কারণ এতে দৈনন্দিন কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটে না। কিন্তু এর বেশি হলে তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কতবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক?

কেউ যদি দিনে সাত থেকে দশ বারের বেশি প্রস্রাব করলে তা হতে পারে টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ। আমেরিকার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস অনুসারে, ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে একদিনে ৩ লিটার থেকে গুরুতর ক্ষেত্রে ২০ লিটার পর্যন্ত প্রস্রাব হতে পারে। এমনটা ঘটলে সেই ব্যক্তির সারাক্ষণই জল তৃষ্ণা পাবে। যতবারই জল পান করুক না কেন তার মুখ শুকনোই লাগবে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে যে তার একমাত্র কারণ ডায়াবেটিস, এমন নয়। উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি কিংবা মূত্রাশয়ের সমস্যা থাকলেও বেশি প্রস্রাব হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘন ঘন প্রস্রাবের পরও যদি কেউ সুস্থ থাকেন ও স্বাভাবিক বোধ করেন তবে দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy