খাবার নিয়ে যারা গবেষণা করে থাকেন তাদের দেওয়া একটি রিপোর্ট অনুসারে সারা দুনিয়ায় যেকটি সুপার ফুডের সন্ধান পাওয়া যায়, ডালিয়া তার মধ্যে অন্যতম। আসলে চটজলদি রান্না হয়ে যাওয়া এই খাবারটির শরীরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার, যা কনস্টিপেশন সমস্যা দূর করার পাশাপাশি কোলেস্টেরল লেভেল কমাতে এবং ওজন হ্রাসেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন এই খাবরটি খেলে আরও অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন…
১. ওজন কমায়:
অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় যাদের রাতের ঘুম উড়েছে, তাদের নিয়মিত ব্রেকফাস্টে ডালিয়া খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। আসলে যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে, এই খাবারটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার, যা অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। আর কম খাওয়ার কারণে ওজন কমার পথ হয় প্রশস্ত। প্রসঙ্গত, সকাল সকাল ডালিয়ে খেলে শরীরে ক্যালরির অভাবও দূর হয়। ফলে লাঞ্চের আগে এনার্জির ঘাটতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
২. ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
ডালিয়া খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় না। বরং ধীরে ধীরে রক্তে বাড়তে থাকে চিনির পরিমাণ। ফলে হঠাৎ করে সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা এই খাবার খেলে থাকে না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে ডালিয়ার স্থান একেবারে নিচের দিকে। তাই তো এই খাবারটি খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের কোনও ক্ষতি তো হয়ই না, উল্টে ডায়াবেটিস রোগ একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
৩. পেটের রোগ নিমূল হয়:
এতে রয়েছে ২.৫ গ্রাম ফাইবার, যা শরীরে প্রবেশ করার পর হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে একদিকে যেমন বদ-হজমের সমস্যা দূর হয়, তেমনি কনস্টিপেশনের মতো রোগও একেবারে নিমূল হয়ে যায়। তাই পেটের রোগের কারণে যাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে, তারা এবার থেকে ব্রেকফাস্টে বা লাঞ্চে ডালিয়া খাওয়া শুরু করতে পারেন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৪. পেশির গঠনে সাহায্য করে:
আপনি কি সিলভাস্টার স্টেলন বা ডোয়েন জনসনের মতো বডি বানাতে চান? তাহলে নিয়মিত জিমে গিয়ে ওজন তোলার পাশাপাশি ডালিয়া খাওয়ারও অভ্যাস করতে হবে। এমনটা করলে কি হবে জানেন? ডালিয়ায় উপস্থিত প্রোটিন পেশির গঠনে সাহায্য করবে। ফলে দ্রুত শরীর শেপে আসতে শুরু করবে, সেই সঙ্গে মাসল বিল্ডিং এতটা ভাল হবে যে আপনার স্বপ্ন পূরণ হতে দেরি লাগবে না।
৫. দেহে পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে:
শরীরকে সচল রাখতে প্রতিদিন যে যে পুষ্টিকর উপাদানের প্রয়োজন পরে, তার অনেকগুলিই ডালিয়া থেকে পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি হোস্টেল বা মেসে থেকে থাকেন, তাহলে কম পয়সায় পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে ডালিয়া খাওয়া শুরু করতে পারেন। এতে পুষ্টির অভাব হওয়ার কারণে নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।
৬. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
পরিবারে কি হার্টের রোগের ইতিহাস আছে? তাহলে নিয়মিত ডালিয়ে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন হার্টের শক্তি এতটা বেড়ে যাবে যে কোনও ধরনের হার্ট ডিজিজই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। আসলে এই খাবারটির অন্দরে থাকে একাধিক উপকারি উপদান একদিকে যেমন শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, তেমনি অন্যদিকে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতেও সাহায্য করে। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৭. ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ডালিয়ায় থাকা ফাইবার, ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়। তাই তো মহিলাদের বেশি করে এমন ধরনের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা।