
গত সপ্তাহে, ১৪ মার্চ রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে তুঘলক রোডে অবস্থিত বিচারপতি ভার্মার সরকারি বাংলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় বিচারপতি দিল্লিতে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর পরিবারের সদস্যরা দমকল বিভাগে খবর দেন। রাত ১১টা ৪৩ মিনিটে দুটি দমকল ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল প্রধান অতুল গর্গ জানান, “একটি স্টোর রুমে আগুন লেগেছিল, যেখানে স্টেশনারি ও ঘরোয়া জিনিসপত্র মজুত ছিল। আগুন নেভাতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লেগেছে।”
প্রাথমিক অভিযোগ ও দমকলের খণ্ডন
অগ্নিকাণ্ডের পর সূত্রের খবরে দাবি করা হয়েছিল, আগুন নেভানোর সময় দমকলকর্মীরা ওই বাংলোর একটি ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকার সন্ধান পান এবং পুলিশকে খবর দেন। এই ঘটনা বিচারপতি ভার্মাকে বিতর্কের মুখে ফেলে দেয় এবং সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম তাঁকে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে দমকল প্রধান অতুল গর্গ শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কোনও কর্মী বাসভবন থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করেনি। এই দাবি ভিত্তিহীন। আমরা শুধু আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ছিলাম।”
তদন্তে নতুন প্রশ্ন
দমকল বিভাগের এই দাবি ঘটনার তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে নগদ টাকা উদ্ধারের খবর কোথা থেকে এল? পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের পর বাংলোর নিরাপত্তা কর্মী ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনও কোনও স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ঘটনাস্থলে টাকা ছিল বা কে সেই তথ্য ছড়িয়েছে।
বিচারপতি ভার্মার নীরবতা
এই ঘটনার পর থেকে বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তিনি বর্তমানে ‘ছুটিতে’ রয়েছেন বলে জানা গেছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ইতিমধ্যে একটি ইন-হাউস তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে দমকল বিভাগের সর্বশেষ বক্তব্যের পর তদন্তে নতুন দিক খোলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিরোধী দলগুলো এটিকে বিচারপতিদের উপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ হিসেবে দেখেছে। তবে দমকলের দাবির পর সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন লিখেছেন, “এটা কি তবে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা ছিল?” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “সত্য যাই হোক, বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য তদন্ত জরুরি।”
এই ঘটনার পুরো সত্য উদঘাটনে তদন্তকারী সংস্থাগুলোর উপর নজর রয়েছে। দমকলের বক্তব্যের পর এখন দেখার, এই রহস্যের জট কীভাবে খোলে।