শ্রীলংকার পর এবার জ্বালানি সংকটের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। সংকটের মুখে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির ব্যবহার হ্রাসে সাপ্তাহিক কর্মদিবস ছয়দিন থেকে কমিয়ে ফের পাঁচ দিনে ফিরিয়ে নিয়েছে দেশটির সরকার।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী মরিয়াম আওরঙ্গজেব জানান, মন্ত্রিসভা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য রোববারের পাশাপাশি শনিবারও সাপ্তাহিক ছুটির দিন বহাল রাখার অনুমোদন দিয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি… জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য আমাদের মরিয়া পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। বিদ্যুৎ বাঁচাতে আমাদের প্রতিটি বিকল্প পথই নেয়া প্রয়োজন।”
গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তানে নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দায়িত্ব নেয়ার দিনই শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
দেশে উৎপাদন বাড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কর্মদিবস একদিন বাড়ানোর কারণে সরকারি কার্যালয় এবং কর্মীদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহারও অনেকাংশে বেড়ে যায়।
প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে পাকিস্তানে উৎপাদন হচ্ছে ২১,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ২৮,৪০০ মেগাওয়াট। তথ্যমন্ত্রী বলেন, কর্মসপ্তাহ একদিন কমানোর পদক্ষেপের ফলে প্রতিবছর ৩৮ কোটি ৬০ লাখ ডলারের জ্বালানি সাশ্রয় হবে।
মন্ত্রী জানান, গুরুত্বপূর্ণ সফর ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণও কমানো হচ্ছে।মন্ত্রিসভা মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ জ্বালানি কোটা ৪০ শতাংশ কমানোর অনুমোদন দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
তাছাড়া, শুক্রবার সব সরকারি এবং আধা-সরকারি অফিসের কাজ বাসা থেকে করা এবং দোকানপাট দ্রুত বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে মন্ত্রিসভা। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মন্ত্রিসভা একটি কমিটিও গঠন করেছে।
অর্থনৈতিক দুর্দশাগ্রস্ত পাকিস্তানে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ সংকট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জনগণ। ব্যাহত হচ্ছে শিল্পোৎপাদন।
শাহবাজ শরিফের সরকার এই সংকটের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রশাসনের বিদ্যুৎ খাতের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে। তবে ইমরান ও তার সহযোগীরা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।