জেলেনস্কিকে ধরতে প্রেসিডেন্ট ভবনে পৌঁছেছিল রুশ বাহিনী, উঠে এলো চমকে দেওয়া তথ্য

টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিনিধি সিমন শুস্টার সম্প্রতি সময় কাটিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। তিনি এ সময় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির যুদ্ধ পরিচালনা পর্যবেক্ষণ করেন এবং যুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়ে তার মতামত নেন।
সিমন জানিয়েছেন, জেলেনস্কি বর্তমানে একটি বাঙ্কারে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি প্রতিদিনকার করণীয় কাজের তালিকাটি দেখে নেন। তিনি বলেন, আমি এটায় বারবার চোখ বুলাই, দেখি কিছু ভুল হলো কিনা। আমার বিবেক আমাকে শান্ত হতে দেয় না। তিনি তার কাজের ফাঁকে ফাঁকে যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেন শুস্টারের সঙ্গে।

বৃহস্পতিবার তিনি সিমন শুস্টারকে জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনারা যখন হামলা শুরু করে, তখনই প্রেসিডেন্ট ভবনের খুব কাছে চলে আসে রাশিয়ান সেনারা। বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে বাড়ির আশপাশে। এ সময় জেলেনস্কি তার পরিবার নিয়ে পালানোর প্রস্তুতি নিতে থাকেন।

সিনেমার মতো ওই রাতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানতে পারে, রাশিয়ার একটি বিশেষ টিম জেলেনস্কিকে তুলে নিতে বা হত্যার উদ্দেশ্যে কিয়েভে এসেছে। জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ অ্যান্ডরি ইয়ারমাক বিষয়টিকে অভূতপূর্ব ও সিনেমার মতো বলে অভিহিত করেন।

এদিকে এমন হামলার পরই যুক্তরাষ্ট্র হেলিকপ্টারে করে জেলেনস্কিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নতুন নির্বাসিত সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে জেলেনস্কি তা নাকচ করে দিয়ে ভবনের বারান্দায় গিয়ে একটি ভিডিও করেন, যা সাড়া ফেলে বিশ্বজুড়ে।

সবশেষ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সফরের মধ্যেই বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কিয়েভ। এতে একজন নিহত হয়েছেন। রাজধানীতে অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আতঙ্কিত স্থানীয়সহ প্রবাসীরা।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের কিয়েভ সফরের মধ্যেই রকেট হামলা চালায় রাশিয়া। প্রতিনিয়ত শঙ্কার মাঝে দিন পার করছেন রাজধানীবাসী। কৃষ্ণ সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ মস্কভা ডুবে যাওয়ার পর নতুন করে রকেট ও বোমা হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় কিয়েভ। অন্যান্য শহর থেকে কিয়েভকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে অভিযান জোরদার করেছে রুশ সেনারা। আতঙ্কিত সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও।

কিয়েভের মেয়র জানিয়েছেন বৃহস্পতিবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলেও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো।

রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ শহর সবসময়ই কেঁপে ওঠে বোমার আঘাতে। কিয়েভবাসীর প্রতিটি রাত শুরু হয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে। তারা নিজেরাই জানে না কখন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে তাদের প্রিয় এই শহর।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy