প্রেম প্রতিটি মানুষকেই পূর্ণ করে। সবার জীবনে একবার হলেও প্রেম আসে। তবে সেক্ষেত্রে পার্থক্য থাকে প্রেমিক-প্রেমিকার স্বভাবের মধ্যে।
প্রেমিকের স্বভাবের সঙ্গে মিলিয়ে প্রেম করলে সেই সম্পর্ক খুব সুখের হয়। এই ব্যাপারে জন্মদিনের তারিখ খুব ভালো উপকার করে। কারণ জন্মদিনের তারিখই বলে দিতে পারে কোন প্রেমিক কোন স্বভাবের হয়ে থাকে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক এই ব্যাপারে কিছু তথ্য-
যেকোনো মাসের ১,১০,১৯ ও ২৮ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
এরা প্রেমিক হিসাবে কর্তৃত্বপূর্ণ মানসিকতা, আত্মকেন্দ্রিক স্বভাবের, খুব আবেগ প্রবণ ও অস্থির প্রকৃতির হয়। এরা প্রেম বা দাম্পত্য জীবনে সেভাবে মোটেই একনিষ্ঠ নয়। এরা একই প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে দীর্ঘকাল কাটালে ভীষণ বোর ফিল করে, তার কারণ এরা উত্তেজিত স্বভাবের। নিত্য নতুন চাহিদা এদের ভেতরে কাজ করে এবং এদের যৌন চাহিদা খুব বেশি। এদের প্রেম পরীক্ষামূলক। এদের সঙ্গে যারা প্রেম করবেন, তারা সব সময় নানা টেনশন ভোগ করবেন। এদের বিপরীতে টিকে থাকতে হলে তাকে সব সময় নিত্য নতুনভাবে সব ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যৌন জীবনেও থাকতে হবে নতুনত্ব। এরা কিছুটা বোকা। এরা বোঝেনা বিউটি ও ব্রেন একসঙ্গে পাওয়া নেহাত ভাগ্যের ব্যাপার।
যেকোনো মাসের ২, ১১, ২০ ও ২৯ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
প্রেমিক হিসেবে এরা খুব গ্রহণযোগ্য। এরা জন্মগত ভাবে প্রচুর সাধারণ জ্ঞানের অধিকারী। তাই এদের সঙ্গে প্রেম করে সুখ আছে এবং প্রেমের জীবনও খুব মসৃণ ভাবে চলে। এরা প্রেমিক হিসাবে সঙ্গীকে টেনশনে ফেলে না। বরং বিপরীতের অনেক বোঝা নিজেরাই বহন করে। এরা কিছুটা ঘরোয়া স্বভাবের। তাই প্রেমের পর এদের বিয়ে করলে দাম্পত্য জীবন সুখের হয়ে থাকে। এদের প্রেমে যৌন আকর্ষণের চেয়ে স্নেহের সম্পর্ক বেশি থাকে। এরা বিপরীত লিঙ্গকে কোনো কথা দিলে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। এরা সঙ্গীর সুখ সুবিধার প্রতি বিশেষ নজর দেন।
যেকোনো মাসের ৩, ১২, ২১ ও ৩০ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
এরা প্রেমিক হিসাবে কিছুটা কৌতুক প্রিয় ও এনার্জেটিক। প্রেমকে পরীক্ষার নিরীক্ষার চোখে দেখে থাকে এরা। এরা প্রেমকে খুব খোলামেলা ভাবে দেখে থাকে। এরা প্রেমে লুকিয়ে চলা সেভাবে পছন্দ করে না। এরা সামাজিক ভাবে চলতে পছন্দ করে। এরা প্রেমকে বদ্ধ খাঁচার মধ্যে রাখতে চায় না। কখনো সে রকম কিছু ঘটলে এরা সেই প্রেম থেকে বেরিয়ে আসার প্রবল চেষ্টা করবেই। এরা সুখী প্রকৃতির প্রেমিক। এরা প্রেমে প্রবল ভাবে প্রতিদিন যৌনসুখ উপভোগ করতে চায়। এদের সঙ্গে যে বা যারা প্রেম করবে তাদের সঙ্গে সেভাবেই তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এদের চলাফেরায় গ্ল্যামারস ভাব থাকে। এরা বিবাহিত জীবনে ভীষণ আদর্শবাদী ও নানাভাবে জীবনকে উপভোগ করতে চায়। কোনো ক্রমে একঘেয়েমি এসে গেলে এরা সেখান থেকে চলে যাবে।
যেকোনো মাসের ৪,১৩,২২ ও ৩১ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
প্রেমিক হিসাবে এরা বিশ্বস্ত, প্রেমে এরা খুব সিরিয়াস। প্রেমের ক্ষেত্রে এদের খাঁচাবদ্ধ জীবন হলে এরা সহজেই হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে কারণ ভেতরে ভেতরে এরা ভীষণ ইমোশনাল। সমস্যা সমাধানকারী হিসাবে এই তারিখ গুলোর সংখ্যাতত্ত্বের জগতে বিশেষ নাম রয়েছে। তাই এরা বিশ্বস্ত প্রেমিক হিসাবে সঙ্গীকে সব সময় সুরক্ষা দিয়ে চলে। বাইরের দিক থেকে এদের প্রকৃতির উপর একটা শীতল আবরণ রয়েছে বা রোমান্টিক ভাবের অভাব রয়েছে। যদিও এদের ভেতরে ভেতরে ভীষণ যৌন আবেদনের শক্তি রয়েছে। এরা মনে করে অপরকে যাবতীয় সুখে সুখী করা এদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাই এরা প্রেমিক বা প্রেমিকার প্রতি ভীষণ ডেডিকেটেড। এরা সব সময় চেষ্টা করে বিপরীত লিঙ্গকে সব দিক থেকে সুখী করতে। আর না করতে পারলে এরা নিজেকে অপরাধী মনে করে।
যেকোনো মাসের ৫, ১৪ ও ২৩ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
সংখ্যাতত্বের নিয়মে এই তারিখের লাভারদের বন্ধুর সংখ্যা কম। একমাত্র নিজেদের জন্ম তারিখের ব্যক্তি ছাড়া কিন্তু প্রেমের হাটে এদের গ্রহণ যোগ্যতা সব থেকে বেশি। প্রেমিক হিসেবে সব থেকে বেশি মানায় এই তারিখের মানুষদের। সব তারিখের বিপরীত লিঙ্গের জাতক/জাতিকারা এদের বেশি করে চায়। কারণ এরা সহজেই যেকোনো প্রকৃতির বিপরীত লিঙ্গকে সহজেই বশে আনতে পারে। সহজেই তার মতো হয়ে যেতে পারে, মিশতে পারে, তার মতো হয়ে কথা বলতে পারে, তার মতো হয়ে চলতে পারে। এরা বন্ধু হিসেবে বেশ মজাদার, কৌতূহলী যেকোনো বিষয় নিয়ে তাদের মতো করে মতামত দিতে পারে। এরা ভীষণ ভাবে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় স্বভাবের। ফলে বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিরা এদের তার মতোই ভাবে। এই স্বভাবের প্রেমিকদের বিপরীত সেক্সের লোকেরা পছন্দ করে তাদের জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী করতে। তবে এরা খুব সহজেই ঝিমিয়ে পড়ে, কোনো বিষয়ে দ্রুত আগ্রহ হারায়। এরা খুব গভীরে কাউকে হয়তো সেভাবে ভালোবাসে না। বাস্তবিক পক্ষে এরা প্রেমের থেকে ফ্লার্ট করতে ভালোবাসে বেশি। প্রেমে যেখানে দায়িত্ব আছে, সেখানে এরা কেমন যেন অনুপস্থিত।
যেকোনো মাসের ৬, ১৫ ও ২৪ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
এরা প্রেমিক হিসেবে প্রেমের ব্যাপারে খুব বেশি স্পর্শকাতর মানসিকতার। ফলে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সময় অনেক সময় সম্পর্কের দানা বাঁধার আগেই ভেঙে যায়। আবার সম্পর্ক তৈরির পর এদের ভেতর খুঁতখুঁতে স্বভাব কাজ করে। ফলে যে এদের সঙ্গে প্রেম করতে আসে সেও টেনশনে পড়ে যায়। ভেবে উঠতে পারে না কীভাবে এদের মন রক্ষা করবে। প্রেমিক হিসেবে এরা অনেক বেশি নিজের বাড়ি ও পরিবারের কথা ভাবে। এদের উপর পারিবারিক দায়িত্ববোধ নানা কারণে এসে থাকে। ফলে প্রেমের ক্ষেত্রেও তার একটা ভীষণ প্রভাব পড়ে। জন্মছকে শুক্র খারাপ থাকলে এরা তার জন্য বিপদে পড়ে যেতে পারে বা এদের স্বাস্থ্যের উপর কুপ্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে নারী হলে। তবে প্রেমে নির্বাচন ঠিক হলে এরা সবথেকে বিশ্বস্ত প্রেমিক হতে পারে। শুক্র শুভ হলে এদের সংস্পর্শে যারাই আসবেন তারাই এদের ভেতরের চুম্বকীয় আকর্ষণ অনুভব করবেন। আবার প্রেমে ব্যর্থ হলে এদের মতো শত্রু দ্বিতীয় আর কেউ হয় না। কখনো আবার এদের প্রেম ব্যক্তি প্রেম থেকে সমাজ প্রেম, সমাজ থেকে দেশপ্রেম, তথা জীবপ্রেম তথা বিশ্বপ্রেম, সব শেষে ঈশ্বরপ্রেমে পরিণত হয়।
যেকোনো মাসের ৭, ১৬ ও ২৫ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
প্রেমিক হিসেবে এই জন্মদিনের লোকেরা ততটা পরিচিত নয়। এরা সাধারণের কাছে বেশ ক্রিটিক্যাল বলেই চিহ্নিত। তাই বলে কি এরা প্রেম করে না? করে, তবে সে প্রেম বেশ গভীর। এদের বিপরীতে যারা এসে থাকে তাদের স্বভাবে গভীরতা থাকতে হবে। সাধারণ জাগতিক প্রেম এদের সেভাবে সুখী করতে পারে না। বরং এরা আত্মীক প্রেমে বিশ্বাসী। এরা প্রেমের মাঝে এমন কিছু যা সাধারণের বুদ্ধির মধ্যে পড়ে না, মনের মানুষ না পেলে এরা আজীবন একাকীই থেকে যাবে। এরা যার তার সঙ্গে ঘর বাঁধতে পারে না। এদের প্রেম সম্বন্ধে ধারণা এত উঁচু যে, এরা তার জন্য নিজেরাই অনেক সময় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এদের প্রেমের নাগাল পেতে হলে সঙ্গীকে সেই রকম উচ্চতা থেকে আসতে হবে। এই শ্রেণির বেশির ভাগ প্রেমিক বিজ্ঞানী, দার্শনিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বা অধ্যাপক, কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, উচ্চাঙ্গের নৃত্যশিল্পী ও গায়ক, শিক্ষাবিদ হয়। এদের চিন্তা ও চেতনায় বিশেষ ভাবে এত উচ্চস্তরের খুঁতখুঁতে ভাব রয়েছে যার জন্য এরা যেখানে সেখানে প্রেম নিবেদন করতে পারে না। এরা নিরবে প্রেমের পদতলে নিজেকে নিঃস্বার্থ ভাবে নিবেদন করে থাকে, যা অন্য তারিখ গুলোতে নেই বললেই চলে।
যেকোনো মাসের ৮, ১৭ ও ২৬ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
এরা প্রেমে সবার আগে যেটা খোঁজে সেটা হল দায়িত্ববোধ, অঙ্গীকার ও নিরাপত্তা। এরা বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রেমকে বিচার করে। অর্থ মুল্যে বা সম্পদ মূল্যে এরা বিপরীত লিঙ্গকে বিচার করে থাকে। এর জন্য এদের মধ্যে কোনো পাপবোধ কাজ করে না। এরা মানবিকবোধে প্রেম করে না। এদের বেশির ভাগই প্রেমটাকে বিয়ে হিসাবেই দেখে থাকে। প্রেম যে হতে পারে, এদের সেটা একদমই মনে হয় না। এদের কাছে প্রেম মানেই জাগতিক সুখ ভোগের, যেখানে টাকা পয়সা, সম্পদ বাড়িঘর জায়গা জমি সব এসে যায়। এদের কারো যদি প্রচুর টাকা থাকে, তখন সে সেই পর্য়ায়ের লাভার খোঁজে। না হলে সে তাকে আন্ডার এস্টিমেট করে। ভুল করে এরা যদি এমন কারো সঙ্গে প্রেম করে বসে, এবং পরে দেখে তার অর্থ সম্পদ যতটা ভাবা গিয়েছিল তার ধারে কাছে ততটা নেই, এরা কাল বিলম্ব না করে সেখান থেকে নানা অজুহাত দেখিয়ে সরে যাবে। প্রেমের নাম করে অপরের কাছ থেকে কেমন করে স্বার্থ আদায় করে নিতে হয়, এদের ব্যবহারে সেটা প্রকাশ হয়ে পড়ে।
যেকোনো মাসের ৯, ১৮ বা ২৬ তারিখে সঙ্গীর জন্মদিন হলে
প্রেমিক হিসেবে এই তারিখের ছেলে ও মেয়েরা যেকোনো ভাবেই খুব সাহায্যকারী। এরা যার সঙ্গেই প্রেম করুক না কেন, তাকে উজার করে সাহায্য করে থাকে, সেটা সব দিক থেকেই। এরা লাভার হিসেবে মনে করে তার প্রেমিকার বা প্রেমিকের সমস্যা সমাধান করা তার নৈতিক কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। তাই এদের প্রেম হয় বেশ গভীর। প্রেমে যদি কোথাও রোমান্টিসিজম থাকে তা এদের প্রেমেই লক্ষ্য করা যায়। এদের প্রেমে ভয়ংকর বৈচিত্র রয়েছে। এরা সমাজের যেকোনো শ্রেণি থেকে এদের বিপরীত লিঙ্গকে খুঁজে আনে। এরা প্রেমের ক্ষেত্রে খুবই কেয়ারিং। জগতে যত মহৎ প্রেমের উপাখ্যান রয়েছে তা এদের জীবন ইতিহাসকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে। এরা উদার স্বভাবের বলেই বিপরীত লিঙ্গের কাছ থেকে অফার এলে এরা বেশ কনফিউজড হয়ে পড়ে।