এখন মা-বাবা অনেক আধুনিক। তাদের সন্তান মানুষ করার পদ্ধতিও আধুনিক। আর সেই আধুনিক সংস্কৃতির দান হল রাতে অনেকেই আদরের সন্তানে ঘুমোনোর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করেন। এতে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে কী ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে তা হয়তো জানেন না অনেকেই। বুদ্ধির বিকাশে ব্যাঘাত ঘটানোর পাশাপাশি হরমোনের জটিলতাও বাড়াতে পারে এ অভ্যাস।চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, শিশুর মা-বাবার সঙ্গে ঘুমোনোর অভ্যাস তার মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক, মা-বাবার সঙ্গে ঘুমোনোর ফলে শিশুর শরীরে কী পরিবর্তন আসে…
মনোবিদদের মতে, অন্তত একটা বয়স পর্যন্ত সন্তানের সঙ্গেই মা-বাবার ঘুমোনো উচিত। এতে নিজের জিনিসপত্র ভাগ করে নিতে শেখে শিশুরা। সেই সঙ্গে মা-বাবার সঙ্গে তার সম্পর্কও আরও সহজ-সরল হয়।রাতে শিশুর কোনো প্রয়োজন পড়তেই পারে। হঠাৎ অসুস্থ বোধ করতে পারে সে। সন্তান আলাদা ঘরে থাকলে সব সময় উঠে গিয়ে তার ঘরে ঘুরে আসা যায় না। এদিকে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লেও সে তা বুঝে ওঠার আগেই কোনো অঘটন ঘটতে পারে। তাই রাতেও নিজেদের কাছেই রাখুন সন্তানকে।শিশুর ব্যক্তিগত বোধ ও নিজস্ব জগৎ আলাদা করে যত দিন না তৈরি হচ্ছে, তত দিন তাকে কাছে রাখলে, শিশু নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে না।
চিকিৎসকদের মতে, যে সব সন্তান একটা সময় পর্যন্ত বা চিরকাল অভিভাবকদের সঙ্গে ঘুমোয়, তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পরিবারের বেশি ঘনিষ্ঠ হয় তারা।সন্তানকে গল্প বা গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ানোর অভ্যাস থাকলে তা তার কল্পনাশক্তি বাড়ায় ও আবেগী করে তোলে। ঘুমের মধ্যে যে সব শিশু শরীরে মা-বাবার স্পর্শ পায়, তাদের হরমোনাল সমস্যা কম হয়।সন্তান কাছে থাকলে মা-বাবার উদ্বেগও কমে। মাঝে মাঝে উঠে গিয়ে দেখে আসার তাড়না থাকে না বলে, ঘুম ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমে। এতে সুস্থ তাকে অভিভাবকদের শরীরও।অনেকেই মনে করেন, রাতে নিজস্ব সময়ে সন্তান কাছে থাকলে অভিভাবকদের ব্যক্তিগত পরিসর কমে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, তেমন প্রয়োজনে নিজস্ব সময় বরাদ্দ করুন। দরকারে নিজেদের জন্য ব্যবহার করুন অন্য কোনো ঘর। শারীরিক মিলনের পর সন্তানের কাছে ফিরে এক সঙ্গে ঘুমোন।