চিনি খেলেই কি ডায়াবেটিস হয়? জেনেনিন কি বলছে বিশেষজ্ঞরা

ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ভয়াবহ হারে। আগে মনে করা হতো শুধু বয়স্কদের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা হতে পারে, আসলে তা নয়। এখন বয়সে তরুণ অনেকের ক্ষেত্রেও দেখা দিচ্ছে এই সমস্যা। আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হলে বা কোষগুলো শরীরে তৈরি হওয়া ইনসুলিনে ঠিকমতো সাড়া না দিলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। আর এই সমস্যাকেই বলা হয় ডায়াবেটিস।

আমাদের শরীরে মজুদ থাকা সুগার বা খাবার থেকে পাওয়া ফ্যাট ব্যবহারে শরীরকে সাহায্য করে প্যানক্রিয়াস থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষজ্ঞদের মতে, জিনগত কারণ ছাড়াও ও অজানা কিছু কারণে টাইপ-১ ডায়াবেটিস হতে পারে। এটি সাধারণত অল্প বয়সে ধরা পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত হলে প্যানক্রিয়াসের পক্ষে ইনসুলিন তৈরি করা সম্ভব হয় না।

এদিকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের কারণ হিসেবে বংশগত ও জীবনযাপনের ধরন দুটোই দায়ী। এ ধরনের ডায়াবেটিসে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এই রোগের কারণে প্যানক্রিয়াস ইনসুলিন তৈরি করলেও তা পর্যাপ্ত থাকে না বা তাতে শরীরের কোষগুলো সাড়া দেয় না।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, চিনি খেলে ডায়াবেটিস হয় এটি একটি ভুল ধারণা।

ম্যাক্স হেলথকেয়ারের এন্ডোক্রিনোলজি, ডায়াবেটিস ও ওবেসিটির পরিচালক ড. সুজিত ঝা জানান, চিনি খেলেই যা তা সরাসরি ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী এমনটা কিন্তু নয়। তবে চিনি খাওয়ার কারণে এমন কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যা থেকে হতে পারে ডায়াবেটিস। চিনি ওজন বৃদ্ধি বা ওবেসিটির জন্য দায়ী। আর এই সমস্যা ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ। ড. সুজিত বলেন, যদিও চিনি খেলেই ডায়াবেটিস হয় না তবে অতিরিক্ত রিফাইন্ড সুগার গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এতে কোনো ধরনের পুষ্টি থাকে না, শুধু ক্যালোরি থাকে।

ভারতের কৈলাশ হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসক ড. পারভীন ভার্মা জানিয়েছেন, কেবল চিনিযুক্ত খাবার খেলেই যে তা ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী তা নয়। স্ট্রেস, স্থুলতাসহ আরো বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। রিফাইন্ড সুগারের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক রয়েছে। এর কারণ চিনির মতো শর্করাযুক্ত খাবার আমাদের শরীরে গ্লুকোজোর মাত্রা কমিয়ে দেয়।

চিনি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। চিনি ক্ষতিকর বলে যত আলোচনা তা মূলত বিভিন্ন পানীয়, বেকিং ফুড ও রেডিমেড খাবারে থাকা অতিরিক্ত চিনির কারণে। ডায়াবেটিস মূলত নির্ভর করে বংশগতি, পারিবারিক ইতিহাস ও জীবনযাপনের ধরনের ওপর।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy