চরম বিদ্যুৎ সংকটে ধনী দেশগুলোও! জেনেনিন দেশগুলোর নাম

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্বেই সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা। এই যুদ্ধের সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রথম ধাক্কা এসে লেগেছে সম্ভবত বিদ্যুৎখাতে। যুদ্ধের বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে। সরবরাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎখাতে। ঘাটতি মোকাবেলায় বাংলাদেশে এরই মধ্যে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু হয়েছে। তবে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদ্যুৎ সংকটের জের বইতে হচ্ছে জার্মানি, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো ধনী দেশগুলোকেও।

নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপ লাইন দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় ইউরোপের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি জার্মানির শিল্প-কারখানাগুলো ভবিষ্যৎ হুমকিতে পড়েছে। শীতপ্রধান দেশটিতে আসন্ন শীতে নাগরিকদের বাড়িঘর গরম রাখতে বাড়তি বিদ্যুতের জোগান দেয়া সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে জার্মানি। দেশটির অর্থমন্ত্রী রোবার্ট হাবেক এই সংকটকে স্মরণকালের অন্যতম আখ্যা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল গ্যাস রপ্তানি কমিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ফের সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

একই অবস্থা ইউরোপের আরেক দেশ পোল্যান্ডেরও। বাড়িঘর ঠাণ্ডা রাখতে নাগরিকদের কাঠ ব্যবহার করার অনুরোধ করেছে পোল্যান্ড সরকার। নাগরিকরা যেন সহজেই কাঠ সংগ্রহ করতে পারে সেই জন্যও ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির সরকার। কয়লাসংকটের কারণেই এমন পদক্ষেপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে মাসখানেক আগে থেকেই প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। দেশটিতে লাখ লাখ নাগরিকের বাসাবাড়িতেই নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের জানিয়ে দিয়েছে, নিউসাউথওয়েলস ও তাসমানিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হবে।

প্রাকৃতিক গ্যাসের ঘাটতি দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহেও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। গত মাসেই সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, ৫টি রাজ্যেই বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎনির্ভর রাজ্য কুইন্সল্যান্ডও ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন ও শক্তিবিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস বাউন স্মরণকালের সবচেয়ে তীব্র বিদ্যুৎসংকট সামাল দিতে জনগণকে সাশ্রয়ী ও সংযমী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তবে ইউরোপের দেশ নয়, বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে এশিয়ার অন্যতম উন্নত দেশ জাপানেও। দেশটির চাহিদার ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ আমদানির মাধ্যমে মেটানো হয়। যার মূল্য পরিশোধ করা হয় ডলারে। বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লার দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বিশাল অঙ্কের অর্থ পরিশোধে বিপাকে পড়েছে সমগ্র দেশের অর্থনীতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতি উচ্চমূল্যে গ্যাস কিনছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশটি। রাশিয়ার সঙ্গে চলমান বিরোধের পরও দেশটি থেকে গ্যাস আমদানি টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল টোকিও। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় আরও সংকটে পড়েছে দেশটি।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy