ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। কারও ঘাম বেশি হয়, কারও কম। কিন্তু ঘামের কারণে সৃষ্ট দুর্গন্ধের কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় অনেককেই। কিন্তু এই বিরক্তিকর গন্ধ সৃষ্টি হয় যে ঘামের কারণে, সেটি আসলে গন্ধহীন। তাহলে ঘামের কারণে গন্ধ কেন হয়? আমাদের ত্বকের নিচের বিশেষ গ্রন্থি থেকে তৈলাক্ত ক্ষরণের কারণে এই গন্ধ অনুভূত হয়। এ ধরনের গ্রন্থি বেশিরভাগই থাকে বগলের নিচে। যেগুলো কখনো কখনো বেশ সক্রিয় থাকে।
শরীরের বেশিরভাগ অংশ আবৃত থাকে বিশেষ ঘাম গ্রন্থি দিয়ে। এই গ্রন্থিগুলোকে ‘ইক্রাইন’ ঘাম গ্রন্থি বলা হয়। আমাদের শরীরে অন্য ঘামগ্রন্থিও আছে। যেগুলোকে বলা হয় ‘অ্যাপোক্রাইন’ ঘাম গ্রন্থি। এগুলো থাকে লোমযুক্ত স্থানে। এগুলো থেকে বের হয় তৈলাক্ত যৌগ। কোনো কারণে আমরা চাপ, ভয়, উদ্বেগ, ব্যথা ইত্যাদি অনুভব করলে এ গ্রন্থিগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে যৌন উত্তেজনার সময়ে।
যে কারণে গন্ধ হয়
ঘামের গ্রন্থি থেকে নির্গত তৈলাক্ত নিঃসরণের কোনো গন্ধ থাকে না। তবে এগুলো হলো ত্বকে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার খাবার। এসব ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীর থেকে নির্গত ঘামকে রূপান্তর করে ফ্যাটি অ্যাসিডে। সেইসঙ্গে যোগ করে গন্ধের জন্য দায়ী যৌগকে। আমাদের শরীরে সৃষ্ট গন্ধের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করে জেনেটিক্স। আমাদের অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থিগুলো চিন্তাভাবনা, আবেগ ও জীবনযাত্রায় প্রতিক্রিয়া জানায়। ফলে এগুলো গন্ধকে প্রভাবিত করে। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই বগলের লোম দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত অ্যাপোক্রাইন ঘাম গ্রন্থি সক্রিয় থাকে না। যে কারণে শিশুদের শরীরে ঘামের কারণে দুর্গন্ধ অনুভব হয় না। হরমোন উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে এই গন্ধ পরিবর্তিত হয়।
ঘামের গন্ধ থেকে মুক্তির উপায়
প্রতিদিন গোসল করলে ঘামের গন্ধ কমে। কারণ এর ফলে অ্যান্টিপারস্পাইরেন্ট গ্রন্থির মাধ্যমে নিঃসৃত ঘামের পরিমাণ কমায়। ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে কাজ করে ডিওডোরেন্টও। সেইসঙ্গে সুতির পোশাক পরলে ঘামের গন্ধ কমে। পরিচ্ছন্ন পোশাক পরা, চাপমুক্ত থাকা ও ক্যাফেইন গ্রহণের পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে ঘামের গন্ধ কমানো যায়।ts