গ্রামাঞ্চলে কৃষকরা কৃষিকাজের পাশাপাশি কৃষি সম্পূরক ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।প্রধানত গ্রামীণ এলাকায় ব্যাপক হারে পশুপালন করা হয়। পশুপালনের মাধ্যমে ডেইরি করা হয়। এছাড়া গোবর সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফসলের বৃদ্ধি এবং মাটির গঠনের জন্য গোবর সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু গোবরের এমন একটি ব্যবহার আছে যা হয়তো আপনি জানেন না। দুর্গা প্রিয়দর্শিনী নামের এক নারী এমন এক অনন্য ব্যবহার অর্জন করেছেন যে তা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। গোবর ব্যবহার করে রং তৈরির অভিনব পরীক্ষা করেছেন এই নারী। আজকের পর্বে আমরা দেখব দুর্গা প্রিয়দর্শিনীর সাফল্যের গল্প।
দুর্গা একজন সাধারণ গৃহবধূর মতো জীবনযাপন করছিলেন। সে সবসময় অনুভব করত যে তাদের আলাদা পরিচয় থাকা উচিত। তিনি কৃষিকাজে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। দুগ্ধ ব্যবসায়। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি দুগ্ধ ব্যবসায় আগ্রহী ছিলাম।”
তিনি হরিয়ানার ঝাজ্জার গ্রামে পশুপালন শিখতে যেতেন। তিনি ইন্টারনেটে একটি ভিডিও দেখেছিলেন যাতে গোবর থেকে রং করা হচ্ছে। সরকারও এ কাজে সহযোগিতা করছে। এরপর তিনি পশুপালন ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে নিজেকে পুরোপুরি চিত্রকলায় নিয়োজিত করেন। এই ক্ষেত্রে নিজের এমন একটি স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করেছেন। তারা গোয়ালের পাশাপাশি অন্যান্য কৃষকদের কাছ থেকে গোবর কিনত। তা থেকে সহজেই কাঁচামাল পাওয়া যায়। তাছাড়া কৃষকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
গোবর থেকে রং তৈরি-
প্রথমে সমপরিমাণ গোবর জলে মিশিয়ে নিন। তারপর এটিকে ট্রিপল ডিস্ক রিফাইনারিতে নিক্ষেপ করে শক্ত করা হয়। পেইন্টের ভিত্তি এটিতে ক্যালসিয়াম যোগ করে তৈরি করা হয়। আর তা থেকেই ইমালসন এবং ডিস্টেম্পার তৈরি হয়। এই রং তৈরিতে প্রায় ৩০ শতাংশ গোবর ব্যবহার করা হয়। এই পেইন্টটি আসল রঙের সাথে প্রাকৃতিক রং মিশ্রিত করে সম্পূর্ণ অর্গানিক হয়ে যায়।
তিনি জৈব রং সম্পর্কে আরও বেশি লোককে সচেতন করতে চান। সাম্প্রতিক কর্পোরেট কেলেঙ্কারির ফলে এই বিশেষত্বের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রাকৃতিক রঙের বাজারজাতকরণের জন্য দুর্গা নিজেই কঠোর পরিশ্রম করছেন।
ওড়িশা সহ ছত্তিশগড়ের কয়েকটি শহরে দুর্গা বিপণন শুরু করেছে। পেইন্টের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে তারা কলেজ ও সেমিনারেও যাচ্ছেন। একজন সাধারণ নারীর এই অস্বাভাবিক গল্প সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।