যে কোনও জীবের ক্ষেত্রেই খিদেটা একেবারে প্রাথমিক জৈবিক চাহিদার অন্যতম। একেবারে খুদে শিশুও খিদে পেলেই জানান দেয়, পেট ভরলে শান্ত হয়। তাই একদল পুষ্টিবিদ মনে করেন যে খিদে পাওয়ার পর তবেই খাবার মুখে তোলা উচিত। অন্য একদল আবার বলেন যে ঘড়ির কাঁটা ধরে খেলে শরীর বেশিদিন ভালো থাকে। এর মধ্যে কোনটা ঠিক, সে প্রশ্ন কি আপনার মাথাতেও ঘুরছে?
একটু তলিয়ে ভেবে দেখলেই বুঝবেন যে দু’টি ধারণার মধ্যে কার্যত কোনও বিরোধ নেই কিন্তু! যদি শরীর সুস্থ থাকে এবং আপনি সঠিক খাবার খান, তা হলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর খিদের বোধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার কথা। আমাদের পাকস্থলীতেই ঘ্রেলিন নামক একটি হরমোন তৈরি হয়, খিদে পেলেই তার ক্ষরণ হয়। পেট গুড়গুড় করলেই বুঝতে হবে যে তা আপনার থেকে খাবার চাইলে এবং পাকস্থলীও সে খাবার হজমের জন্য প্রস্তুত। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে বাড়তি ক্যালোরির বোঝা থাকার কথা নয়। কিন্তু যাঁরা খিদের তোয়াক্কা না করে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর মুখ চালাতে থাকেন স্রেফ ইচ্ছে করছে বলেই, তাঁরা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করে ফেলেন।
অনেকে বলেন, নির্দিষ্ট সময় বাদ-বাদ কিছু না কিছু মুখে দিলে কখনওই পেট ঠেসে খাওয়া হয় না। তা গ্যাস-অম্বল নিয়ন্ত্রণে ও ক্যালোরির মাত্রা হাতের মধ্যে রাখতে সাহায্য করে। উলটো মতবাদে যাঁরা বিশ্বাসী, তাঁদের ধারণা — খিদে না পাওয়া সত্ত্বেও স্রেফ অভ্যেসের বশেই যাঁরা মুখ চালাতে থাকেন, তাঁরা শরীরের প্রয়োজনের দিকটিকে মোটেই গুরুত্ব দেন না।
আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, দুয়ের মধ্যে ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করুন। খিদে না পেলে যেমন খাওয়া ঠিক নয়, তেমনই আবার দীর্ঘক্ষণ খিদেটাকে জিইয়ে রাখারও কোনও মানেই হয় না। সেই সঙ্গে খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে ও পরে প্রচুর জল খেতে থাকুন। তাতে হজম ঠিকঠাক হবে, পরের ভোজের জন্য প্রস্তুত হবে শরীর। আর কোনও পরিস্থিতিতেই অতিরিক্ত খাবার খেয়ে অসুস্থতা বা অস্বস্তি বাড়াবেন না – তার মতো বোকামি দু’টি নেই!