পূর্ব ইউরোপের কিছু দেশের পর এবার গ্রিসের সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ইউক্রেনে সোভিয়েত আমলের ট্যাংক পাঠানোর ব্যবস্থা করছে জার্মানি৷
রাশিয়ার হামলা মোকাবিলায় সোভিয়েত আমলে তৈরি ট্যাংক বা অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেনের সৈন্যদের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক৷ কোনো বাড়তি প্রশিক্ষণ ছাড়াই দ্রুত সেগুলি কাজে লাগাতে পারে তারা৷ পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশের কাছে এমন সরঞ্জাম ছিল৷ জার্মানির উদ্যোগে চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া ও পোল্যান্ডের মতো দেশ সেগুলি ইউক্রেনের হাতে তুলে দিচ্ছে৷ এর বদলে জার্মানি সে সব দেশকে বিনামূল্যে নিজস্ব ট্যাংক সরবরাহ করছে৷ এবার গ্রিসের সঙ্গেও জার্মানি ‘রিংটাউশ’ নামের এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বোঝাপড়ায় এসেছে৷
মঙ্গলবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিটসোটাকিসের সঙ্গে আলোচনার পর জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সেই ঘোষণা করেন৷ ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতা এমন সিদ্ধান্ত নেবার পর দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুঁটিনাটী বিষয়গুলি সম্পর্কে আলোচনা করবেন৷ শলৎসের মতে, এই প্রক্রিয়ায় দ্রুত ইউক্রেনের কাছে আরও ট্যাংক পৌঁছানো যাবে৷ গ্রিস জার্মানির কাছ থেকে ‘মার্ডার’ ট্রান্সপোর্ট ট্যাংক পাবে৷ শলৎস সরাসরি উল্লেখ না করলেও গ্রিসের সেনাবাহিনীর কাছে সোভিয়েত আমলের ‘বিএমপি-১’ মডেলের ট্যাংক রয়েছে৷ গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সংকটের শুরু থেকেই ইউক্রেনের জন্য সব রকম সহায়তার নীতির উল্লেখ করেন৷ ফেব্রুয়ারি মাসেই সে দেশ কালাশনিকভ, ট্যাংক-বিধ্বংসী অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠিয়েছে৷ তবে ভৌগোলিক ও ধর্মীয় কারণে রাশিয়ার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের কথাও বলেন তিনি৷
চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়ার সঙ্গে জার্মানির বোঝাপড়া নিয়ে এখনো কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হলেও পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আনজাই দুদা জার্মানির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ করেছেন৷ মঙ্গলবার শলৎস বলেন, তিনি পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাটেউশ মোরাভিয়েৎস্কির সঙ্গে ‘রিংটাউশ’ নিয়ে কথা বলেছেন৷ পারস্পরিক সংলাপের ভিত্তিতে তিনি বিষয়টির নিষ্পত্তির উপর জোর দেন৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেনকে সোভিয়েত আমলের ট্যাংক সরবরাহ করে পোল্যান্ড জার্মানির কাছে যে অত্যাধুনিক মডেলের ট্যাংক আশা করেছিল, সেগুলির সরবরাহে সমস্যা দেখা যাচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে৷ অন্যদিকে চেক প্রজাতন্ত্র ‘টি-৭২’ মডেলের ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠিয়ে জার্মানির কাছ থেকে ১৪টি ‘লেপার্ড’ মডেলের ব্যাটেল ট্যাংক ও একটি লেপার্ড আর্মার্ড ভেহিকেল পাচ্ছে, যেগুলি পুরানো হলেও যথেষ্ট কার্যকর হিসেবে পরিচিত৷
সরসারি অথবা ‘রিংটাউশ’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠালেও দেশে-বিদেশে জার্মানির সরকার বেশ চাপের মুখে রয়েছে৷ নিন্দুকেরা বলছেন, সুযোগ থাকলেও জার্মানি ইউক্রেনকে যথেষ্ট সামরিক সহায়তা করছে না৷ এমনকি গৃহিত সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রেও অযথা বিলম্ব ঘটছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করছেন৷