এক ভাইরাস থাকতেই ছড়িয়ে পড়েছে আর এক নতুন ভাইরাস ‘মাঙ্কিপক্স’, ২৩টি দেশের মোট আক্রান্ত আড়াই শতাধিক

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই ছড়িয়ে পড়া আরেক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স ছড়িয়েছে ২৩টি দেশে। এসব দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন আড়াই শতাধিক মানুষ। এছাড়া আরও শতাধিক মানুষ সংক্রামক এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি সামগ্রিকভাবে জনস্বাস্থ্যের ওপর ‘মাঝারি মাত্রার ঝুঁকি’ তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। রোববার সংস্থাটি এই তথ্য জানায়।

ডব্লিউএইচও জানায়, মাঙ্কিপক্স রোগের ভাইরাস যদি ‘হিউম্যান প্যাথোজেন’ বা মানব রোগজীবাণু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে এবং এরপর সেটি ছোট শিশু ও গুরুতর রোগের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে তাহলে সেটি বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ২৬ মে পর্যন্ত মাঙ্কিপক্স ভাইরাস ডব্লিউইচও’র ২৩টি সদস্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব দেশ ও অঞ্চলে মোট ২৫৭ জন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং প্রায় ১২০ জন সন্দেহভাজন রোগীর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ডব্লিউএইচও বলছে, পর্যবেক্ষণ সম্প্রসারিত করা হলে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত আরও রোগী খুঁজে পাওয়া যাবে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে মানুষের শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এছাড়া মাঙ্কিপক্সকে মধ্য পর্যায়ের সংক্রামক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি।

‘মাঙ্কিপক্স’ মূলত গুটিবসন্ত বা চিকেনপক্স গোত্রেরই রোগ। তবে, এটি গুটিবসন্তের থেকে কম মারাত্মক, মৃত্যুর হার ৪ শতাংশেরও নিচে। বেশিরভাগ রোগীই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে, এর আগে কখনও আফ্রিকার বাইরে মহামারি আকারে এই রোগ ছড়াতে দেখা যায়নি।

মূলত এক জন অন্য জনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে বিশেষ করে ত্বক থেকে ত্বকের সংস্পর্শে এলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও এখনও পর্যন্ত যারা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংক্রমণ বা উপসর্গগুলো সাধারণত বেশ মৃদু।

উল্লেখ্য, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে সহজে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা নেই এবং অসুস্থতা সাধারণত হালকা হয়। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, ভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।

রয়টার্স বলছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগকেই যুক্তরাজ্য, স্পেন এবং পর্তুগালে শনাক্ত করা হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy