হিন্দু রীতি মেনে বন্ধুর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন মুসলমান এক বন্ধু। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের রানীগঞ্জ এলাকার ।
নিয়ম মেনে টানা ১৩ দিন অশৌচ পালন করে মস্তক-মুণ্ডন করে হিন্দু বন্ধুর শেষকৃত্য করা ওই ব্যক্তির নাম মহাম্মদ শামসুদ্দিন। তিনি রানীগঞ্জের গির্জা পাড়ার বাসিন্দা। তার বন্ধুর নাম যোগেন্দ্র প্রসাদ।
জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মগরা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ৫০ বছর বয়সী যোগেন্দ্র প্রসাদ। তবে কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করতেন আসানসোলের রানিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে। অবিবাহিত যোগেন্দ্রর আত্মীয়-স্বজন ছিল না। রানিগঞ্জের স্থানীয় তৃণমূল সংগঠনের অফিসে তার সঙ্গে একদিন আলাপ হয় মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের । এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর বন্ধুত্ব।
বেশ কিছুদিন ধরে যোগেন্দ্র অসুস্থ ছিলেন। গত ১১ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। যেহেতু পরিবারের কেউ ছিলনা তাই বন্ধু শেষকৃত্যের সব দায় নেন শামসুদ্দিন। এরপর টানা ১৩ দিন অশৌচ পালনের পর মাথা ন্যাড়া করে সম্পূর্ণ হিন্দু শাস্ত্র মতে মন্ত্র পাঠ করে বন্ধুর শ্রাদ্ধের কাজ সম্পন্ন করেন তিনি । শামসুদ্দিনের ভাষায়, হিন্দু বা মুসলিম হয়ে নয়, মানুষ হয়ে জন্মেছেন,বন্ধুর শেষ কাজ করতে পেরে তিনি গর্বিত।
এদিকে, বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা এবং সম্প্রীতির এমন দৃষ্টান্ত দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রাও। অনেকেই শামসুদ্দিনের সেই হিন্দু বন্ধুর শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে আর্থিকভাবে সহায়তা করছেন। পরে সেই অর্থ দিয়ে যোগেন্দ্রের শ্রাদ্ধের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।