দীর্ঘায়ু আমাদের সবারই কাম্য। সুন্দর এই পৃথিবীতে ক’টা দিন বেশি বেঁচে থাকতে আমরা কতো কিছুই না করি। এসবের মধ্যে কিছু নিয়ম মেনে চললে দীর্ঘায়িত হতে পারে নারীদের আয়ুষ্কাল। অন্তত ৫টি নিয়ম মেনে চললে ১৪ বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়তে পারে নারীদের। আর পুরুষদের বাড়তে পারে অন্তত ১২ বছর।
এই পাঁচটি নিয়ম হচ্ছে-
ধূমপান না করা
নিয়মিত ব্যায়াম করা
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
স্বাস্থ্যকর শারীরিক ওজন ধরে রাখা
পরিমিত মদ পান করা
হার্ভার্ডের টি এইচ চ্যান পাবলিক স্কুল অব হেলথের একদল গবেষক সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেন।
তাদের দাবি অনুযায়ী, ৫০ বছরের মধ্যে যেসব নারীদের বয়স তারা যদি এই ৫টি নিয়ম মেনে চলেন তাহলে তাদের জীবতকাল ১৪ বছর পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। আর পুরুষরা যদি এসব নিয়ম মেনে চলেন তাহলে তাদের আয়ুষ্কাল বাড়তে পারে অন্তত ১২ বছর।
গবেষক দলের প্রধান ডা. ফ্রাংক হু জানান, “রোগ হওয়ার পর চিকিৎসার থেকে রোগ যেন না হয় সেজন্য আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ভাল। প্রতিদিনকার খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইলে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে নানারকম রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। এছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয়ও কমিয়ে আনা যায় অনেকখানি”।
গবেষণায় বিগত ৩৪ বছরের নারীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য এবং ২৭ বছরের পুরুষদের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা হয়। পর্যালোচনা শেষে দেখা যায় যে, যারা উপরোক্ত পাঁচটি নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলেছেন তাদের মধ্যে অন্তত ৭৪ শতাংশ নারী ও পুরুষ নিয়মগুলো যারা মেনে চলেন না তাদেরকে বেশিদিন ধরে বেঁচে ছিলেন অথবা বেঁচে আছেন।
হৃদরোগ, স্ট্রোক অথবা ক্যান্সার জনিত কারণে নিয়ম মেনে চলা ব্যক্তিদের মৃত্যু হারও অন্যদের থেকে অনেক কম। কার্ডিও ভাস্কুলার জনিত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার কমে যায় অন্তত ৮২ শতাংশ।
গবেষকেরা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায় সবজি, ফলমূল, শস্যদানা, অলিভ অয়েল এবং মাছ থাকতে পারে। হৃদরোগ এবং ক্যান্সার থেকে রক্ষা করবে এই খাবারগুলো।
প্রতিদিন অন্তত আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম করাকে অবশ্যই মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।
স্বাস্থ্যকর শারীরিক ওজন বলতে গবেষকরা বলছেন, যাদের ওজন ও দৈহিক উচ্চতার অনুপাত ১৮ দশমিক ৫ থেকে ২৪ দশমিক ৯ এর মধ্যে তাদের ওজন স্বাভাবিক।
আর দিনে আধা গ্লাস রেড ওয়াইন পান করা নারীদের জন্য পরিমিত পরিমাণের মদ পান। অন্যদিকে পুরুষদের জন্য এর পরিমাণ দিনে এক গ্লাস।
ডা. হু আরও বলেন, “দীর্ঘায়ুর সাথে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকগুলো শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির জন্যই উপকারী না বরং স্বাস্থ্য খাতে যারা কাজ করেন বিশেষ করে যারা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ”।