আমেরিকায় ব্যাংক বিপর্যয় নিয়ে সরব হলেন ওয়ারেন বাফেট, দিলেন পরামর্শ

মার্কিন ব্যবসায়ী ও বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন বাফেট ব্যাংকিংখাতে বিপর্যয় নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাইডেনের একটি টিম ও বাফেটের মধ্যে গত সপ্তাহে একাধিকবার আলাপ হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বাফেট সম্ভবত মার্কিন আঞ্চলিক ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করছেন। সেই সঙ্গে এই বিলিয়নেয়ার বর্তমান গোলযোগ সম্পর্কে আরও ভালো পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন।

সংকটে পড়া যে কোনো ব্যাংককে সহায়তা করার ব্যাপারে এই ধনকুবেরের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ধুঁকতে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা ফেরাতে তার তৎপরতা এখনো অব্যাহত।

এর আগে লেহম্যান ব্রাদারর্স হোল্ডিংস ইনকরপোরেশন-এর পতনের পর ২০০৮ সালে গোল্ডম্যান স্যাক্স ইনকর্পোরেটেডকে ৫ বিলিয়ন ডলার আমানত দিয়েছিলেন বাফেট।

বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ও হোয়াইট হাউজের প্রতিনিধিরা মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারাও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মার্কিন নিয়ন্ত্রকরা গত সপ্তাহজুড়ে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করার জন্য ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে। বিপর্যয়ের মধ্যে পড়া ব্যাংকগুলো বীমাবিহীন আমানত সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বাইডেনের দল, রাজনৈতিক ধাক্কার ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় ব্যাংকগুলো এ সপ্তাহে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংককে স্থিতিশীল করতে স্বেচ্ছায় ৩০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। একে স্বাগত জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। সরাসরি বেলআউট ছাড়াই সংকট কাটিয়ে উঠতে বাফেট বা অন্যরা এগিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

১০ মার্চ মূলধন সংগ্রহের ব্যর্থ প্রচেষ্টা ও আমানত নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার কারণে হঠাৎ আমেরিকার ১৬তম বৃহত্তম ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি), যার প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে, বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র শক্তিশালী করতে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ২২৫ কোটি ডলার সমমূল্যের শেয়ার বিক্রি করবে এমন ঘোষণা দিয়েছিল গত ৮ মার্চ। ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে আমেরিকান ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স করপোরেশনের ঘোষণা আসে এটি বন্ধ করে দেওয়ার। এরপর বন্ধ হয়ে যায় সিগনেচার ব্যাংকও। আর্থিক গোলযোগ শুরু হয় ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকেও।

কোনো একটি ব্যাংক দেউলিয়া হলে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক কাজ করে এবং প্রশ্ন আসে পরবর্তীতে কোনটি? অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিপর্যয়ের মধ্যে পড়া ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন কমিয়ে দেয় বা সরে যায়। বিনিয়োগকারীদের মনোবল ভেঙে পড়ে। আমানতকারীরা ক্ষতির সম্মুখীন হন।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy