ফেসবুক ভিডিয়োয় ঠিক কী বলেন রূপঙ্কর? তিনি জানান, ‘কেকে দারুণ গায়ক। কিন্তু ওঁর ভিডিও দেখে আমি অনুভব করলাম, আমাদের কলকাতায় কেকে-র লেভেলে যাঁরা যাঁরা নাম করেছেন অর্থাৎ ন্যাশনাল লেভেলে কেকে-র যে জায়গা সেই অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের লেভেলে যাঁরা যাঁরা নাম করেছেন, সেই পজিশনে যে সমস্ত গায়ক গায়িকা আমাদের কলকাতায় রয়েছেন যেমন আমি, অনুপম, সোমলতা, ইমন, রাঘব, মনোময়, উজ্জ্বয়িনী, ক্যাকটাস, রূপম তাঁরা সবাই কেকে-র থেকে ভালো গাই।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি সরাসরি প্রশ্ন রাখেন who is kk? কে এই kk?
আর সেই ভিডিও কেকের মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও বেশি করে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও দেখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। তারা রূপঙ্করের কথার বিরুধ্যে সারাব হয়ে উল্টে মন্তব্য করেছেন ‘আপনার জেল হওয়া উচিত’,
প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সালের ২৩ আগস্ট কেকের জন্ম দিল্লিতে এক হিন্দু মালয়ালি পরিবারে। বেড়ে ওঠেন নয়া দিল্লিতে। পড়াশোনা করেন দিল্লির মাউন্ট সেন্ট ম্যারিস স্কুলে। এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর আট মাস একটি হোটেলের বিপণন নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন কেকে।
কয়েক বছর পর, ১৯৯৪ সালে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান কেকে। বলিউডে নেপথ্য সংগীতশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর আগে তিনি প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দেন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত দলের সমর্থনে ‘জোশ অব ইন্ডিয়া’ গানে কণ্ঠ দেন কেকে। গানটির ভিডিওতে ক্রিকেট দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা যায় তাকে।
কেকে সংগীতশিল্পী কিশোর কুমার ও সংগীত পরিচালক রাহুল দেব বর্মণের দ্বারা প্রভাবিত। তার প্রিয় আন্তর্জাতিক সংগীতশিল্পী হলেন মাইকেল জ্যাকসন, বিলি জোয়েল, ব্রায়ান অ্যাডামস। কেকে কখনো সংগীতের প্রাতিষ্ঠানিক তালিম গ্রহণ করেননি। তবে তার কণ্ঠ থেকে বেরিয়েছে শ্রোতাপ্রিয় বহু গান। তিনি প্রথম সিনেমার গানে কণ্ঠ দেন ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত সংগীত পরিচালক এ আর রহমানের সংগীতে।
ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়নসহ একাধিক পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেছেন কেকে। পাশাপাশি দুটি স্ক্রিন পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়া সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি থেকেও সেরা গায়ক হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন কেকে।
সব ছেড়ে মঙ্গলবার এই গায়ক চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এদিন কলকাতার নজরুল মঞ্চে লাইভ শোতে অংশ নেন তিনি। এরপর ফিরে যান হোটেলে। সেখানে গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত তখন ৯টা। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে গায়কের।