প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার মানুষ মারা যায় আর একই সময় আক্রান্ত হয় ৬৩ হাজার ৯৯০ জন। কিডনি সুস্থ রাখতে সবচেয়ে ভালো উপায় প্রাকৃতিক পদ্ধতি। নিচে সাতটি পানীয় তুলে ধরা হলো যা প্রাকৃতিকভাবে আপনার কিডনিকে সুস্থ রাখবে :
১। বনফুলের চা
বনফুলকে আমরা অনেকেই আবর্জনা মনে করি। কিন্তু এটি একটি চমৎকার স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎস। একটি বনফুলের পুরো অংশই খাবারযোগ্য। এটি আপনার কিডনির জন্য অনেক উপকারী। বনফুলের চা ভিটামিন এ, বি-কমপ্লেক্স, সি এবং ডি, লোহা, পটাসিয়াম এবং দস্তার একটি ভালো উৎস। এটি মূত্রাশয়ে প্রস্রাব বর্ধক এবং হারানো পটাসিয়াম ফিরিয়ে আনে।
আমেরিকায় আদিবাসীর মধ্যে কিডনি রোগের চিকিৎসায় ওষুধ হিসেবে বনফুল ব্যবহার করা হয়। এটি একটি প্রদাহরোধী এবং কিডনির পাথর অপসারণে কার্যকরী।
২। বিট রস
কিডনি পরিষ্কার রাখতে বিট রসের জুড়ি নেই। পাশাপাশি এটি আপনার লিভার স্বাস্থ্যকে উন্নত করবে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মুক্ত মৌলি দূর করে। বিট রস প্রস্রাবের অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি করে যা কিডনিতে পাথর গড়ে ওঠায় দায়ী ক্যালসিয়াম অপসারণ করতে সাহায্য করে।
বিট রস শরীরের রক্তকে পরিচ্ছন্ন করে তুলতে সহায়তা করে যা কিডনিকে পরিষ্কার রাখে।
৩। আদা চা
আদা চায়ে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা। এটিও মুক্ত মৌল অপসারণের মাধ্যমে কিডনি রোগের সঙ্গে যুক্ত প্রদাহ হ্রাস করে।
আদা ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে গরম জলে পাঁচ মিনিট ফুটাতে হবে। একে মিষ্টি স্বাদের করতে চাইলে একটু মধু মিশিয়ে জল করুন। এই চা সকালের দুর্বলতা ও কাশি দূর করতে সাহায্য করবে। এতে কোলেস্টেরল মাত্রা কম এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দারুন কার্যকরী।
৪। বিছুটি জাতের গাছ
বিছুটি জাতের গাছ এমন একটি উপাদান যা দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যগতভাবে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি প্রদাহ হ্রাস করে। এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কিডনি রোগের চিকিৎসায় এটি ইউরোপের দেশগুলোতে অনুমোদিত।
বিছুটি জাতের গাছ প্রস্রাব বর্ধক। এটি মূত্রনালী থেকে ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। প্রতি কাপ বিছুটি জাতের গাছের চায়ের সঙ্গে বাড়তি এক গ্লাস জল পান করতে হবে। তবে এটি এলার্জির কারণ হতে পারে এবং গর্ভবতী নারীদের এই চা পান করা উচিত হবে না।
৫। লেবুর রস
শরীরের চর্বি দূর করতে এবং লিভার পরিষ্কার করতে লেবুর রসের কার্যকারিতা সম্পর্কে অনেকেই শুনেছেন। লেবু ও কমলার রসে সিট্রেট নামের উপাদান থাকে যা কিডনি থেকে ক্যালসিয়াম অপসারণে সহায়তা করে এবং কিডনিতে পাথর বেড়ে ওঠা রোধ করে। এক গ্যালনের চার ভাগের এক ভাগ জলে চার-পাঁচটি লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
৬। ক্র্যানবেরি জুস
ক্র্যানবেরি রস মূত্রাশয় সংক্রমণের চিকিৎসায় একটি জনপ্রিয় ও কার্যকর চিকিৎসা। যেহেতু এটি প্রথমে কিডনির মাধ্যমে ফিল্টারিং হয়, তাই ক্র্যানবেরি রস কিডনিকে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। কিডনির সংক্রমণে মূত্রাশয় থেকে ব্যাকটেরিয়া কিডনিতে স্থান করে নেয়। ক্র্যানবেরি রস কিডনির ওই ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং এটি কিডনিতে পাথর গড়ে ওঠাও প্রতিরোধ করে।
৭। হলুদের চা
হলুদে রয়েছে চমৎকার স্বাস্থ্য সুবিধা। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি প্রদাহরোধী উপাদান। এ ছাড়া উপাদানটি দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ফলে যে প্রদাহ সৃষ্টি হয় তা বন্ধ করে।
হলুদ উচ্চ রক্তচাপ কমায় যা কিডনি রোগের দ্বিতীয় প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। যেহেতু এটি লিভার ফাংশনও উন্নত করে তাই হলুদের চা পান করলে এটি চমৎকারভাবে কিডনি পরিষ্কার করে।
জলে এক চা চামচ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এর সঙ্গে লেবু রস এবং গোল মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন।