কোনও কিছু খেলে অ্যাসিডিটি হচ্ছে, না খেলেও টক ঢেকুর আর গলা-বুক জ্বালার সমস্যা বড়ো নাকাল করছে? আপাতভাবে সমস্যাটা তেমন গুরুতর বলে মনে না-ও হতে পারে, কিন্তু যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁরা জানেন অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝামেলা ঠিক কতটা ভোগাতে পারে। একটু সচেষ্ট হলেই কিন্তু সমস্যাটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে তার জন্য আপনাকে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতেই হবে। তবে তার আগে জেনে নেওয়া দরকার অ্যাসিড রিফ্লাক্স হয় কেন।
আমাদের খাদ্যনালী (ইসোফেগাস) খাবার ও পানীয় বয়ে নিয়ে যায় পাকস্থলীতে (স্টমাক)। এই গতিটা নিম্নমুখি – সাধারণ পরিস্থিতিতে উপরের দিকে অ্যাসিডের উঠে আসার কথা নয়। তা খাবার হজম করার জন্য নিঃসৃত হয় এবং পাকস্থলীর দিকেই যায়। আমরা যখন ঢেকুর তুলি, তখনও ভিতর থেকেই হাওয়া উঠে আসে, তবে তাতে তেমন কোনও সমস্যা নেই। এক-আধবার চোঁয়া ঢেকুরও উঠতে পারে। কিন্তু বার বার আপনার খাদ্যনালীতে অ্যাসিড উঠে এলে সেখানে প্রদাহ তৈরি হবে। ফলে বুক জ্বালা করবে, গলা পর্যন্ত টকভাব টের পাবেন।
যাঁদের অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আছে, তাঁরা কখনও পেট ভর্তি করে খাবেন না। খাদ্যনালী যেখানে পাকস্থলীতে মেশে, সেখানে একটি রিং গোছের মাসল থাকে, এই মাসলটির নাম ইসোফেগাল স্পিঙ্কটার। এই পেশিটি দুর্বল হয়ে গেলেই রিফ্লাক্স বেশি হয়। তার উপর অতিরিক্ত খাবার খাওয়াটা ঠিক না – তাতে সমস্যা বাড়বে। সারা দিনে অল্প অল্প করে বার বার খেতে থাকুন, এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণটাও সহজ হবে। ইন ফ্যাক্ট, যাঁরা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় বার বার ভোগেন, ওজন কমলেই তাঁদের সমস্যা কমতে আরম্ভ করে। খুব বেশি কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করতে পারলেও ভালো হয়। বিশেষ করে ময়দায় তৈরি ভাজাভুজি যত কম খাবেন তত ভালো। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট হজম করতে সময় বেশি লাগে। তখন পেট ফাঁপে, গ্যাস হয়। জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া, তার ফলে গ্যাস হয় আরও বেশি।কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটে সাধারণত সমস্যা হয় না।
যাঁরা খুব বেশি কফি, ফলের রস বা সফট ড্রিঙ্ক খেতে অভ্যস্ত, তাঁদেরও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের জটিল সমস্যা দেখা দেয়। এড়িয়ে চলুন কাঁচা পেঁয়াজ, তাতেও বুক জ্বালার সমস্যা বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ব্যবহার করুন সুগার ফ্রি চিউয়িং গাম। আপনি যত চিবোবেন, তত বেশি লালা নিঃসৃত হবে মুখ থেকে। তা আপনার অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের পক্ষে দারুণ সহায়ক।