ভাইরাল সেই ‘খাটের গাড়ি’ ও চালক সম্পর্কে যা জানা গেল, জেনেনিন বিস্তারিত

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি অদ্ভুত ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে গড়গড়িয়ে এগিয়ে চলেছে একটি খাট! আপাতদৃষ্টিতে একটি সাধারণ খাটের মতো মনে হলেও, ভালো করে দেখলে বোঝা যায় এর নিচে লুকিয়ে রয়েছে চাকা, স্টিয়ারিং এবং ব্রেকের মতো যন্ত্রাংশ। এই অভিনব ‘খাটের গাড়ি’ যেখানেই যাচ্ছে, কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমাচ্ছেন।
রাস্তায় অন্যান্য যানবাহনের ভিড়ের মাঝে বিছানা পাতা, সুসজ্জিত একটি কাঠের খাট চলতে দেখে পথচারীরা প্রথমে হতবাক হয়ে যান। এমন আজব জিনিস তারা আগে কখনো দেখেননি! কীভাবে চলছে এই খাট? এর চাকা কোথায়? – এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল তাদের মনে। অবশেষে জানা গেল ভাইরাল সেই ‘খাটের গাড়ি’র আসল রহস্য।
জানা গেছে, এই ভিডিওটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের। জেলার রানিনগর বাজার থেকে ডোমকল পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার রাস্তায় বারবার দেখা যাচ্ছিল এই খাট-গাড়িটিকে। ফলে রাস্তায় যানজটও সৃষ্টি হচ্ছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে রানিনগরের পুলিশ চলমান খাটের মালিককে ডেকে নির্দেশ দেয়, ঈদের জন্য রাস্তায় এমনিতেই ভিড়, তার মধ্যে এই আজব খাট বের করায় রাস্তায় আরও ভিড় হচ্ছে। তাই খাট নিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়।
তবে এই ‘খাটের গাড়ি’র মালিক নবাব শেখের উদ্দেশ্য ছিল ভাইরাল হওয়া। পেশায় বেসরকারি বিদ্যালয়ের গাড়িচালক নবাব গত দেড় বছরের চেষ্টায় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ করে এই চলমান খাট তৈরি করেছেন। এর জন্য তিনি একটি ছোট চারচাকা গাড়ির কাঠামো, কিছু যন্ত্রপাতি ও ইঞ্জিন জোগাড় করেন এবং তার ওপর সুন্দর একটি খাট সেট করে রাস্তায় চালাচ্ছেন।
নবাব শেখ জানান, বিদ্যালয়ের গাড়ি চালাতে চালাতেই তার মাথায় এই অভিনব ভাবনা আসে। পড়াশোনা তেমন না হলেও, এমন কিছু তৈরি করার ইচ্ছে ছিল যার মাধ্যমে মানুষ তাকে চিনতে পারবে। তার প্রধান লক্ষ্য ছিল মানুষকে অবাক করে নিজের তৈরি জিনিসকে ভাইরাল করা।
জানা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে নবাব শেখের নামে একটি পেজও রয়েছে, যেটিকে জনপ্রিয় করাই তার মূল উদ্দেশ্য।
নবাবের দাদা এবং ডোমকল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু করার প্রবণতা ছিল নবাবের। সেই লক্ষ্যেই সে এই খাটের গাড়ি তৈরি করেছে। তিনি শুনেছেন, ইতোমধ্যেই ডোমকল মহকুমা এলাকায় এটি বেশ সাড়া ফেলেছে এবং তিনি নবাবের এই প্রচেষ্টার সাফল্য কামনা করেন।