অ্যাপল, স্যামসাংয়ের মতো টেক জায়ান্টদের জন্য এবার নতুন এক প্রতিযোগী! খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবার এবার নামছে স্মার্টফোন ব্যবসায়। শুল্ক হুমকির মুখে থাকা বহুজাতিক কোম্পানিগুলিকে টেক্কা দিতে ট্রাম্পের নামেই বাজারে আসছে নতুন মোবাইল ফোন! গতকাল সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুত্র এরিক ট্রাম্প এই যুগান্তকারী প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। এরিকের দাবি, এই নতুন উদ্যোগের নাম হবে ‘ট্রাম্প মোবাইল’ এবং এটি শুধুমাত্র আমেরিকায় তৈরি মোবাইল ফোনই বিক্রি করবে।

‘T1 ফোন’: সোনালি রঙে, দেশীয় গর্বে
এরিক ট্রাম্প একইসাথে একটি নতুন মোবাইল ফোন ও পরিষেবার ঘোষণা করেছেন, যার নাম ‘T1 মোবাইল’ (T1 Phone)। এই সোনালি রঙের স্মার্টফোনটি সম্পূর্ণরূপে আমেরিকায় ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে, যা ‘মেড ইন আমেরিকা’ স্লোগানকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে।

এরিক ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “কঠোর পরিশ্রমী আমেরিকানদের সাশ্রয়ী মূল্যের একটি ওয়্যারলেস পরিষেবা দরকার, যা তাদের মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করবে, আর একইসাথে দারুণ গুণমানসম্পন্ন হবে।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প পরিবার দেশের প্রতি তাদের অঙ্গীকার এবং আমেরিকান গ্রাহকদের জন্য একটি সাশ্রয়ী ও উচ্চমানের বিকল্প আনার বার্তা দিয়েছে।

প্রি-অর্ডার শুরু, হাতে আসছে সেপ্টেম্বরে
এই মুহূর্তে ‘T1 মোবাইল’ প্রি-অর্ডার করা যাচ্ছে ট্রাম্প মোবাইলের ওয়েবসাইট থেকে। জানা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই ফোন গ্রাহকদের হাতে পৌঁছানো শুরু করবে। শুধুমাত্র নতুন ফোন কেনার ক্ষেত্রেই নয়, বর্তমান গ্রাহকরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকেও ট্রাম্প মোবাইলের পরিষেবার সাবস্ক্রিপশন নিতে পারবেন।

ট্রাম্প অর্গানাইজেশন জানিয়েছে, এই নতুন সোনালি রঙের ফোন অগাস্ট মাস থেকে ৪৯৯ মার্কিন ডলারে পাওয়া যাবে। তবে যারা আগে থেকে বুক করতে চান, অর্থাৎ প্রি-অর্ডারের জন্য তাদের ১০০ ডলার দিতে হবে।

‘৪৭ প্ল্যান’ ও বিশেষ সুবিধা
শুধুমাত্র ফোন নয়, এই মোবাইলের সঙ্গে একটি বিশেষ সার্ভিস প্ল্যানও নিতে হবে যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘৪৭ প্ল্যান’। এর জন্য মাসিক খরচ পড়বে ৪৭.৪৫ ডলার। এই প্ল্যানে গ্রাহকরা পাবেন আনলিমিটেড ভয়েস কলিং, টেক্সট এবং ডেটার সুবিধা। এছাড়াও অতিরিক্ত সুবিধার মধ্যে থাকছে টেলিহেলথ ও রোডসাইড অ্যাসিস্ট্যান্স।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ট্রাম্প মোবাইল সংস্থা আরও জানিয়েছে, স্মার্টফোনটি বাজারে আসবে অগাস্ট ২০২৫-এ, তবে এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত হবে এই বছর সেপ্টেম্বর মাসে। ১৬ জুন থেকেই এর প্রি-অর্ডার শুরু হয়ে গেছে।

কী থাকছে ‘ট্রাম্প মোবাইল’-এর ভেতরে?
ফিচারের দিক থেকেও T1 মোবাইল নজর কাড়তে পারে। এতে রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১৫ অপারেটিং সিস্টেম, ৬.৮ ইঞ্চির অ্যামোলেড ডিসপ্লে, একটি ৫০ মেগাপিক্সেলের মেন ক্যামেরা, ১২ জিবি র‍্যাম এবং ২৫৬ জিবির এক্সপ্যান্ডেবল স্টোরেজ। পাওয়ারের জন্য থাকছে ৫০০০ mAh-এর শক্তিশালী ব্যাটারি।

এছাড়াও, গ্রাহক পরিষেবাকে গুরুত্ব দিয়ে আমেরিকায় ২৫০ আসনের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস সেন্টার তৈরি করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প পরিবার শুধু স্মার্টফোন বিক্রিতেই নয়, গ্রাহকদের সহায়তাতেও নিজেদের ‘আমেরিকান ফার্স্ট’ নীতি বজায় রাখতে চাইছে।

ট্রাম্পের এই নতুন ব্যবসা কতখানি সফল হয় এবং এটি বিশ্বজোড়া স্মার্টফোন বাজারে কতটা প্রভাব ফেলে, তা দেখতে এখন সময়ের অপেক্ষা।