বর্তমান যুগে স্মার্টফোন ছাড়া জীবন প্রায় অচল। মানিব্যাগ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ছবি, ব্যাংকের লেনদেন – সবই এখন ফোনে বন্দি। একইভাবে, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপেও আমাদের জরুরি কাজ এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু অনলাইন প্রতারণা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এসব ডিজিটাল ডিভাইস সুরক্ষিত রাখা এখন অপরিহার্য। গুগলের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা হ্যাকার ও প্রতারকদের হাত থেকে আপনার ডিভাইসকে সুরক্ষিত রাখতে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর উপায় জানিয়েছেন।
১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করুন:
আপনার ফোন এবং ফোনে থাকা বিভিন্ন অ্যাপ সুরক্ষিত রাখার জন্য একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। সহজ বা অনুমানযোগ্য পাসওয়ার্ড যেমন ‘password’ বা নিজের নাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। একটি ভালো পাসওয়ার্ডে ইংরেজি অক্ষর (বড় ও ছোট হাতের), সংখ্যা এবং বিশেষ চিহ্ন বা সিম্বল (যেমন @, #, $, %) – এই সবকিছুর মিশ্রণ থাকা উচিত। এতে হ্যাকারদের পক্ষে আপনার পাসওয়ার্ড ট্র্যাক বা হ্যাক করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।
২. সফটওয়্যার সর্বদা আপডেট রাখুন:
আপনার ডিভাইস, তা স্মার্টফোন হোক বা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ, সেগুলোর সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে সংস্থার ডিভাইস ব্যবহার করছেন, তাদের তরফ থেকে নিয়মিত সফটওয়্যারের আপডেট পাঠানো হয়। অনেকেই সফটওয়্যার আপডেট করতে গড়িমসি করেন বা অবহেলা করেন, যা করা উচিত নয়। যখন আপনার ডিভাইস আপনাকে সফটওয়্যার আপডেটের প্রয়োজন বলে জানাবে, তখনই দ্রুত আপডেট করে নিন। কারণ এই আপডেটগুলির সঙ্গে আপনার ডিভাইসের নিরাপত্তা ফিচারগুলিও আপগ্রেড হয়, যা নতুন হুমকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে।
৩. অনলাইন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন:
অনলাইনে আপনি কী দেখছেন বা কোন লিঙ্কে ক্লিক করছেন, সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকা জরুরি। অনেক সময় আমাদের পরিচিত বা বন্ধুবান্ধবের নাম ব্যবহার করে সন্দেহজনক লিঙ্ক বা ভিডিও পাঠানো হয়। এমন লিঙ্ক পেলে, সেই বন্ধু বা পরিচিতের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে নিন যে তারাই আপনাকে সেগুলি পাঠিয়েছে কিনা। অনলাইনে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, বিপজ্জনক এবং ফিশিং লিঙ্ক আসতে পারে। তাই কোনো লিঙ্কে ক্লিক করার আগে তার উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হোন এবং অপরিচিত বা সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
এই সহজ এবং কার্যকর টিপসগুলো মেনে চললে আপনার স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপকে হ্যাকার ও অনলাইন প্রতারকদের হাত থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে। মনে রাখবেন, সাইবার নিরাপত্তা এখন আর শুধু প্রযুক্তিগত বিষয় নয়, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
