
পুরনো ফোনেই নতুন জীবন! গতি বাড়াতে ও গোপনীয়তা রক্ষায় ৫ সহজ কৌশল
কলকাতা, ১৪ জুন ২০২৫: আপনার প্রিয় স্মার্টফোনটি কি সময়ের সাথে ধীর গতিতে চলছে? হতাশ হবেন না! এখনই নতুন ফোন কেনার প্রয়োজন নেই। কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করলেই পুরনো ফোনকেও ফিরিয়ে আনা যায় তার হারানো কর্মক্ষমতা। একই সাথে বাড়িয়ে নিতে পারবেন আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা।
বিশ্বাস করুন বা না করুন, আপনার ফোনে থাকা জীবাণুর পরিমাণ একটি টয়লেট সিট থেকেও বেশি হতে পারে! তাই শুধু সফটওয়্যার নয়, ফোনের হার্ডওয়্যারকেও নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। এতে ফোনের কার্যক্ষমতা ভালো থাকে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকিও কমে।
এরপর আসা যাক ফোনের গতি বাড়ানোর মূল কৌশলগুলোতে, যা মূলত ফোনের অ্যাপ ও সেটিংস ঘিরে আবর্তিত।
১. ফেলে রাখা অ্যাপগুলো মুছে ফেলুন
প্রথমেই আপনার ফোনের হোম স্ক্রিন বা অ্যাপ ড্রয়ারে একবার চোখ বুলিয়ে নিন। যেসব অ্যাপ আপনি আর ব্যবহার করেন না, সেগুলো নির্দ্বিধায় ডিলিট করুন। পুরনো অ্যাপগুলো শুধু ফোনের স্টোরেজ দখল করে রাখে না, বরং কখনো কখনো অপ্রয়োজনীয় অনুমতিও নিয়ে রাখে, যা আপনার প্রাইভেসির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
ফোনভেদে অ্যাপ ডিলিট করার পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত, অ্যাপ আইকনে লং প্রেস (কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখা) করলে ‘আনইনস্টল’ অপশন চলে আসে। যদি না আসে, তাহলে আপনার ফোন নির্মাতার নির্দেশিকা দেখে নিতে পারেন।
২. অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে স্টোরেজ খালি করুন
অ্যাপের পর এবার আপনার ফোনের ফাইলগুলোর দিকে নজর দিন। ডাউনলোড ফোল্ডারে গিয়ে দেখুন পুরনো কোনো মেনু, মিম, বা ছবি এখনো জমে আছে কি না। এসব অপ্রয়োজনীয় ফাইল সহজেই সরিয়ে ফেলা যায়, যা আপনার ফোনের স্টোরেজ খালি করে গতি বাড়াতে সাহায্য করবে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ডিফল্ট ‘ফাইল অ্যাপ’ ব্যবহার করে এই কাজটি করতে পারেন। বিভিন্ন ফোনে এর নাম ভিন্ন হতে পারে (যেমন: স্যামসাংয়ে ‘মাই ফাইল’, গুগল পিক্সেলে ‘ফাইল’, ওয়ানপ্লাসে ‘ফাইল ম্যানেজার’), তবে কাজ একই। বিশেষ করে ডাউনলোড ফোল্ডারটা ভালো করে দেখুন। অনেক ফোনে বড় ফাইলগুলো আলাদা করে দেখারও অপশন থাকে।
৩. হোম স্ক্রিন কাস্টমাইজ করে দিন নতুন লুক
অ্যান্ড্রয়েডের সবচেয়ে বড় সুবিধাগুলোর একটি হলো, আপনি নিজের মতো করে পুরো ফোনের লুক বদলে নিতে পারেন। নতুন লঞ্চার, আইকন প্যাক ইত্যাদি ইনস্টল না করেও হোম স্ক্রিন সেটিংস-এ সামান্য কিছু পরিবর্তন আপনার ফোনকে অনেকটা নতুন লাগাতে পারে।
হোম স্ক্রিনের খালি জায়গায় লং প্রেস করুন, তারপর ‘হোম সেটিং’-এ ঢুকে অ্যাপ গ্রিডের মাপ (যেমন: ৪x৫ থেকে ৫x৫) পাল্টে দেখুন। চাইলে হোম স্ক্রিনে নিচ থেকে সোয়াইপ করে নোটিফিকেশন আসার মতো সুবিধাও চালু করতে পারেন, যা আপনার ফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও সাবলীল করবে।
৪. প্রয়োজনীয় সেটিংস বদলে নিন এখনই
এই মুহূর্তেই সময় করে আপনার ফোনের বিভিন্ন সেটিংস দেখে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজ করে নিন। যেমন: ডার্ক মোড চালু করলে শুধু চোখের আরামই নয়, ব্যাটারির সাশ্রয়ও হয়। কিংবা, নতুন অ্যাপ ইনস্টল হলেই হোম স্ক্রিনে আইকন চলে আসা বন্ধ করে দিতে পারেন সহজেই, যা হোম স্ক্রিনকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে।
৫. প্রাইভেসি সেটিংস একবার দেখে নিন
সবশেষে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একবার যাচাই করে নিন কোন অ্যাপ কোন ডেটায় অ্যাক্সেস পাচ্ছে। সেটিংস > প্রাইভেসি > পার্মিশন ম্যানেজার-এ গিয়ে লোকেশন, ক্যামেরা, কনট্যাক্ট ইত্যাদিতে কোন অ্যাপ অনুমতি পেয়েছে তা দেখে নিন এবং প্রয়োজন না থাকলে সেগুলোর অনুমতি বন্ধ করে দিন। এটি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে অত্যন্ত জরুরি।
সি-নেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সহজ কাজগুলো নিয়মিত করলে কম সময়েই আপনার ফোনের পারফরম্যান্স যেমন বাড়বে, তেমনি ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। তাহলে আর দেরি কেন? আপনার পুরনো ফোনেই দিন নতুন প্রাণের সঞ্চার!