হালকা-পাতলা ল্যাপটপকে কেন শুধু দামীই হতে হবে? এই মটো নিয়েই আসুস তাদের নতুন ভিভোবুক সিরিজের ব্র্যান্ডিং করছে। আসলেও তাই। আসুস ভিভোবুক সিরিজের নতুন ল্যাপটপগুলো (যেমন আসুস ভিভোবুক S15 S530) দেখতে-শুনতে একেবারেই প্রিমিয়াম গ্রেড ল্যাপটপের মতো। কিন্তু দামের দিক থেকে এগুলো মধ্যবিত্ত কিংবা কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ-তরুণীদের হাতের নাগালেই আছে। এই কারণে ৫০ হাজারের আশেপাশের বাজেটে ভিভোবুকগুলো বরাবরই জনপ্রিয়।
সম্প্রতি বাজারে আসুস ভিভোবুক সিরিজের S14 (14 inch) ও S15 (15 inch) মডেলের নতুন লাইনআপ উন্মোচন করেছে। মাত্র ৪৭ হাজার টাকায় দাম শুরু হওয়া এই ল্যাপটপগুলোতে লেটেস্ট জেনারেশনের সব কম্পোনেন্ট এবং আসুসের লেটেস্ট ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে।
মূলত ডিসপ্লে ও বডি সাইজ বাদ দিলে S14 ও S15 বাকি সব দিক থেকে প্রায় একই রকম। আজকে আমরা আসুসের লেটেস্ট ভিভোবুক S15 মডেলের নতুন এডিশন S530 এর একটি সম্পূর্ণ রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। মডেলটি হার্ডওয়্যার অনুযায়ী কয়েকটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের রিভিউ ইউনিটটি ছিল ৬২,৫০০ টাকা মূল্যের একটি হায়ার-এন্ড ভ্যারিয়েন্ট। কনফিগারেশন ছিল এরকমঃ কোর i5 8250U, ৮ জিবি র্যাম ও ১ টেরাবাইট স্টোরেজ। আর সাথে এনভিডিয়া জিফোর্স এমএক্স ১৩০ মডেলের ২ জিবি ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স।
প্রথমেই চলুন এক নজরে দেখি এটা কী স্পেসিফিকেশন নিয়ে এসেছে।
আসুস ভিভোবুক S15 (S530) স্পেসিফিকেশন
প্রসেসরঃ ইন্টেল ® কোর™ i7-8550U/i5-8250U/i3-8130U
ডিসপ্লেঃ ১৫.৬ ইঞ্চি; ফুল এইচডি ১৯২০×১০৮০ পিক্সেল ন্যানোএজ ডিসপ্লে, ১৭৮° ওয়াইড ভিউ
গ্রাফিক্স কার্ডঃ ইন্টেল ® UHD Graphics 620 /এনভিডিয়া® জিফোর্স® MX150/এনভিডিয়া® জিফোর্স® MX130, ২ জিবি DDR5
মেমোরিঃ ৮ জিবি ২৪০০ মেগাহার্টজ DDR4 (১৬ জিবি পর্যন্ত এক্সপান্ডেবল)
স্টোরেজঃ ১ টেরাবাইট HDD+৮ জিবি SSH / ১ টেরাবাইট HDD + ২৫৬ জিবি SSD
ওয়্যারলেসঃ ডুয়াল ব্যান্ড 802.11ac ওয়াইফাই, ব্লুটুথ ৪.২
ক্যামেরাঃ ৭২০পি এইচডি সেন্সর
পোর্টঃ ইউএসবি ৩.১ জেনারেশন ১ Type-C™ (১টি), ইউএসবি ৩.১ জেনারেশন ১ Type-A (১টি), ইউএসবি ২.০ (২টি), এইচডিএমআই (১টি), মাইক্রো এসডি কার্ড রিডার (১টি), ৩.৫ মিমি কম্বো জ্যাক (১টি)
অডিওঃ আসুস সনিকমাস্টার টেকনোলজি সহ স্টেরিও স্পিকার ও মাইক্রোফোন এরে
ব্যাটারি ও পাওয়ারঃ ৪২Wh ৩ সেল লিথিয়াম প্রিজম্যাটিক ব্যাটারি
আকারঃ ৩৬১.৪ মিমি x ২৪৩.৫ মিমি x ১৮ মিমি
ওজনঃ ১.৮ কেজি
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি
বলে রাখা ভালো, আসুস ভিভোবুক S15 (S530) ল্যাপটপটি অন্যসব ১৫ ইঞ্চি ল্যাপটপের মতো নয়। ১৫ ইঞ্চি ডিসপ্লের ল্যাপটপকে এখনকার সময়ে বড়-ই বলা যায়। কিন্তু এই ল্যাপটপটি হাতে নেয়ার পর ওভারঅল বডিটাকে অনেক ছোট মনে হয়েছে আমার কাছে। এর কারণ মূলত তাদের সরু বেজেলের ন্যানোএজ ডিসপ্লে টেকনোলজি। আসুসের এই ডিজাইন টেকনোলজি ব্যবহারের ফলে ল্যাপটপটির স্ক্রিন টু বডি রেশিও দাঁড়িয়েছে ৮৬ ভাগে। আসলেই চমৎকার ব্যাপার। কারণ এমনটা আমরা সচারাচর লাখটাকা দামের প্রিমিয়াম ল্যাপটপেই দেখতে পেতাম।
ল্যাপটপটি বেশ স্লিম ও ওজন মাত্র ১.৮ কেজি। সরু বেজেলের সাথে আসুসের সিগনেচার এর্গোলিফট টেকনোলজি ব্যবহারের ফলে লিড খোলা অবস্থায় উপরের অংশটি তুলনামূলক উপরে উঠে থাকে। এর ফলে এয়ার ভেন্ট দিয়ে বাতাস চলাচলও বাড়ে আবার টাইপিং করতেও সুবিধা হয়।
ল্যাপটপটির ঢাকনাটিতে ব্রাশড ফিনিশিং এর ধাতব পাত ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এর বাকি অংশ সম্পূর্ণ পলিকার্বনেট দিয়ে তৈরী।
আইসিকল গোল্ড ও গানমেটাল কালার ভ্যারিয়েন্ট এর ল্যাপটপটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার। তবে এর রঙ্গিন এক্সেন্টগুলো শুধুমাত্র ল্যাপটপটির ভিতরের দিকে কিবোর্ড ও ট্র্যাকপ্যাডের অংশটিতে ও সাইডের পোর্ট অংশে ব্যবহার করা হয়েছে। ল্যাপটপটির কালার অনুযায়ী এর কিবোর্ডও সাদা ও কালো দুটি ভ্যারিয়েন্টে পাবেন। এর ঢাকনাটি আপনি সর্বোচ্চ ১৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত হেলাতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবে ডেস্কের উপরে রেখে ব্যবহারের জন্য এটাই যথেষ্ট।