CAR: পুরোনো গাড়ি কিনে ঠকতে না চাইলে খেয়াল রাখুন ৩ বিষয়, জেনেনিন কী কী?

বর্তমান সময়ে যাতায়াতের সুবিধার জন্য এবং সময় বাঁচানোর উদ্দেশ্যে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থাকা অত্যন্ত জরুরি। তবে অনেক সময় শখ পূরণের জন্যও অনেকে গাড়ি কেনেন। যদি ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি কেনা সম্ভব না হয়, তাহলে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি হতে পারে একটি দারুণ বিকল্প। এর মাধ্যমে শখ এবং প্রয়োজন দুটোই সাধ্যের মধ্যে পূরণ করা সম্ভব।

তবে পুরোনো গাড়ি কেনার পরিকল্পনা থাকলে কিছু বিষয় আগে থেকেই ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি। এতে পুরোনো বা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনেও নতুন গাড়ির মতোই ভালো সার্ভিস পাওয়া যাবে। সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার জন্য একটু মনোযোগ এবং বোধগম্যতা প্রয়োজন। যদি আপনি ভালোভাবে যাচাই না করেন, তাহলে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। দেখা যাবে যে টাকা দিয়ে পুরোনো গাড়ি কিনেছেন, তার থেকে বেশি খরচ হচ্ছে এর সার্ভিসিং কিংবা কাগজপত্র ঠিক করতে, যা দিয়ে হয়তো নতুন গাড়িই কেনা যেত। সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনে জিততে চাইলে যে ৩টি বিষয় খেয়াল রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা নিচে বিস্তারিত জানানো হলো:

১. সার্ভিস রেকর্ড পরীক্ষা করুন:
পুরোনো গাড়ি কেনার আগে কিছু মৌলিক বিষয় অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার সময়, আপনার সর্বদা এর সার্ভিস হিস্ট্রি পরীক্ষা করে দেখা উচিত। এর সঙ্গে আপনার গাড়ির মালিক সম্পর্কেও তথ্য নেওয়া জরুরি। গাড়িটি কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে কি না, তাও খুঁজে বের করুন। যদি গাড়ির সার্ভিস রেকর্ড না থাকে, তাহলে সেই গাড়িটি না কেনাই ভালো।

এই তিনটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিন:
সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি পরীক্ষা করা উচিত তা হলো এর ইঞ্জিন। কারণ ইঞ্জিনে সমস্যা হলে এটি মেরামত করতে আপনাকে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হতে পারে। তাই ইঞ্জিনের শব্দ, তেলের স্তর এবং তাপমাত্রা পরীক্ষা করুন। এতে কোনো ছিদ্র আছে কি না বা তেল লিক করে বা চুইয়ে পড়ে কি না, তা খুঁজে বের করুন।

এছাড়া, আপনার সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির সাসপেনশন এবং ব্রেক সিস্টেমও পরীক্ষা করা উচিত। কারণ যদি এই দুটি জিনিসেই সমস্যা থাকে, তাহলে পরে আপনাকে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। অতএব, গাড়ি কেনার সময় এই বিষয়গুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করুন।

২. ইঞ্জিন ও যান্ত্রিক অবস্থা যাচাই করুন:
গাড়ির ইঞ্জিনের স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইঞ্জিন স্টার্ট করার পর কোনো অস্বাভাবিক শব্দ হচ্ছে কিনা, তেল বা অন্য কোনো তরল লিক করছে কিনা, তা খেয়াল রাখুন। গাড়ির তেল ও কুল্যান্টের স্তর পরীক্ষা করুন। সম্ভব হলে, একজন অভিজ্ঞ মেকানিককে দিয়ে ইঞ্জিন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যান্ত্রিক অংশ যেমন গিয়ারবক্স, সাসপেনশন এবং ব্রেক সিস্টেম পরীক্ষা করিয়ে নিন। এই অংশগুলিতে সমস্যা থাকলে ভবিষ্যতে বড় খরচ হতে পারে।

৩. গাড়ির সমস্ত ডকুমেন্ট পরীক্ষা করুন:
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গাড়ির সমস্ত ডকুমেন্ট ভালোভাবে পরীক্ষা করা। গাড়ির চেসিস নম্বর এবং ইঞ্জিন নম্বর রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের (RC) সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন। যদি এটি না মিলে, তাহলে গাড়িটি কিনবেন না। গাড়িটি কতজন মালিকের হাত বদল হয়েছে তাও জেনে নেওয়া জরুরি। পূর্বে গাড়িটির বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল কি না বা কোনো লোন পরিশোধ করা হয়েছে কি না, সে সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জেনে নিন। গাড়ির ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ সার্টিফিকেট (PUC) এবং ট্যাক্স পরিশোধের প্রমাণপত্রও যাচাই করে নিন।

এই বিষয়গুলি ভালোভাবে যাচাই করতে পারলে একটি পুরোনো গাড়ি কিনেও আপনি দীর্ঘ মেয়াদে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন এবং নতুন গাড়ির মতোই সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

সূত্র: অটোকার ইন্ডিয়া

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy