ট্যুরে যাওয়ার আগে গাড়ির কী কী পরীক্ষা করা জরুরি, জেনেনিন এক নজরে

পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে দূর ভ্রমণে যাওয়ার মজা রাস্তায় হঠাৎ ঘটা কোনো যান্ত্রিক ত্রুটিতে মুহূর্তে দুশ্চিন্তায় বদলে যেতে পারে। গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়া, টায়ার পাংচার বা ইঞ্জিন ওভারহিটের মতো অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি এড়াতে ভ্রমণের আগে গাড়ির একটি সাধারণ ‘হেলথ-চেকআপ’ করা অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু আপনার যাত্রা আরামদায়ক করবে না, বরং অপ্রত্যাশিত খরচ থেকেও বাঁচাবে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, দূর ভ্রমণের আগে গাড়ির কোন কোন ১০টি বিষয় অবশ্যই পরীক্ষা করা উচিত:
১. ইঞ্জিন তেল (Engine Oil)
ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স এবং জীবনকাল বজায় রাখতে ইঞ্জিন তেল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
- পরীক্ষা করুন: ডিপস্টিক দিয়ে অয়েলের লেভেল পরীক্ষা করুন।
- তাৎক্ষণিক করণীয়: অয়েলের রং খুব কালো বা ঘন হলে সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করুন।
২. ব্রেক সিস্টেম (Brake System)
নিরাপত্তার প্রধান চাবিকাঠি হলো ব্রেক। হাইওয়ে বা পাহাড়ি রাস্তায় এর কার্যকারিতা জরুরি।
- পরীক্ষা করুন: ব্রেক অয়েলের লেভেল, ব্রেক শু/প্যাড ক্ষয় হয়েছে কি না দেখুন।
- সতর্কতা: ব্রেক দেওয়ার সময় অস্বাভাবিক চিড়-চিড় বা ঘর্ষণের শব্দ হলে মেরামত করান।
৩. টায়ারের অবস্থা ও এয়ার প্রেসার
দীর্ঘ রাস্তায় টায়ারের ভুল প্রেসার বা পুরোনো গ্রিপ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।
- পরীক্ষা করুন: টায়ারের গ্রিপ গভীরতা, সাইডওয়ালে ফাটল এবং সঠিক এয়ার প্রেসার পরীক্ষা করে নিন।
- ভুলবেন না: স্পেয়ার টায়ার (Stepney) কাজের অবস্থায় আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন।
৪. কুল্যান্ট ও রেডিয়েটর (Coolant & Radiator)
দীর্ঘ ভ্রমণে ইঞ্জিন দ্রুত গরম হয়, কুল্যান্ট কম থাকলে গাড়ি ওভারহিট হতে পারে।
- পরীক্ষা করুন: রেডিয়েটরের কুল্যান্ট লেভেল পরীক্ষা করুন এবং কোনো লিকেজ আছে কি না দেখুন।
- জরুরি: দীর্ঘ ভ্রমণের আগে কুল্যান্ট টপ-আপ করা আবশ্যিক।
৫. ব্যাটারি চার্জ ও সংযোগ
রাস্তায় গাড়ি স্টার্ট না নিলে সমস্ত আনন্দ মাটি।
- পরীক্ষা করুন: ব্যাটারির টার্মিনালে কোনো জং পড়েছে কি না, তারের সংযোগ শক্ত আছে কি না পরীক্ষা করুন।
- পরামর্শ: ব্যাটারি পুরোনো বা দুর্বল হলে চার্জ টেস্ট করা ভালো।
৬. লাইট ও ইলেকট্রনিক্স
রাতে নিরাপদ ভ্রমণের জন্য সমস্ত লাইটের সঠিক কার্যকারিতা জরুরি।
- পরীক্ষা করুন: হেডলাইট (ডিমলাইট সহ), ব্রেক লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট, ওয়াইপার ব্লেড এবং ওয়াশার ফ্লুইড পরীক্ষা করুন।
৭. সাসপেনশন ও স্টিয়ারিং
সাসপেনশন ভালো থাকলে যাত্রা আরামদায়ক হয় এবং গাড়ি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- পরীক্ষা করুন: গর্তে পড়লে বা বাঁক নেওয়ার সময় গাড়ি থেকে অস্বাভাবিক শব্দ হয় কি না। স্টিয়ারিং খুব ঢিলা বা শক্ত মনে হয় কি না, তা পরীক্ষা করুন।
৮. জ্বালানি ও ফিল্টার
দীর্ঘ পথে সব সময় পাম্প নাও পেতে পারেন।
- করণীয়: যাত্রার আগে ট্যাঙ্ক পূর্ণ করুন। লং ড্রাইভ হলে ফুয়েল ফিল্টার নোংরা কি না, তা সার্ভিসিংয়ে চেক করান।
৯. জরুরি টুলস ও সেফটি কিট
ছোটখাটো সমস্যা বা দুর্ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এগুলো থাকা আবশ্যক।
- সঙ্গে রাখুন: জ্যাক, রেঞ্চ, টায়ার প্রেসার গেজ, জাম্পার কেবল (Jump-start cable), ফার্স্ট এইড কিট, অতিরিক্ত বাল্ব ও ফিউজ, টর্চ এবং গ্লাভস।
১০. কাগজপত্র ও সাপোর্ট
আইনি জটিলতা এড়াতে এবং প্রয়োজনে সহায়তা পেতে।
- সঙ্গে রাখুন: গাড়ির রেজিস্ট্রেশন (RC), ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স টোকেন, বৈধ ইন্স্যুরেন্স, গাড়ির সার্ভিস বুক।
- টিপস: প্রয়োজন হলে রোডসাইড অ্যাসিস্ট্যান্স নম্বরগুলি (RSA) অবশ্যই সেভ করে রাখুন।