বাইকের কার্বুরেটর পরিষ্কার করা ভালো নাকি খারাপ? জেনেনিন সঠিক কোনটি?

টু হুইলারে ইঞ্জিনে মূলত দু’ধরনের ব্যবস্থা দেখা যায়-কার্বুরেটর এবং ফুয়েল ইনজেকটেড। দুটি সিস্টেমের কাজ করার ধরণ কিছু জায়গায় এক হলেও, রয়েছে বেশ কিছু পার্থক্য। যার ফলে গাড়ির ইঞ্জিনের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং পরিবেশ দূষণ কম হয়।

কার্বুরেটর ইঞ্জিনে মূলত এয়ার-ফুয়েল মিশ্রণ কমবাশন চেম্বারে পাঠাতে সাহায্য করে। বাইকের ইঞ্জিনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কার্বুরেটর। জ্বালানি এবং বাতাসকে সঠিক অনুপাতে মিশিয়ে ইঞ্জিনে পাঠায়, যা বাইকের পারফম্যান্স এবং মাইলেজের উপর প্রভাব ফেলে।

বর্তমানে অবশ্য অনেক নতুন মডেলের বাইক বাজারে এসেছে, যাতে কার্বুরেটর সিস্টেম নেই। ফুয়েল ইঞ্জেক্টেড ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে। তবে বহু পুরোনো বাইক এখনো এই সিস্টেমের উপরেই চলে। খেয়াল করলেই দেখবেন বাইক সার্ভিসিং করাতে গেলেই মেকানিক আপনাকে কার্বুরেটটি পরিষ্কার করিয়ে নিতে বলবে। কিন্তু ভুলেও কাজটি করবেন না। মেকানিকের কথা শুনে তো অবশ্যই না।

আগে দেখুন আপনার বাইকটি ঠিকঠাক ভাবে চলছে কি না। যদি বাইক যদি ঠিকঠাক চলে তাহলে কার্বুরেটর পরিস্কার করার কোনও দরকার নেই। সে মেকানিক যতই বলুন না কেন। কারণ বারবার কার্বুরেটর খুললে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-

কার্বুরেটরের ডিজাইন অত্যন্ত জটিল। একবার খুলে ফেললে লাগানো মুশকিল। তাছাড়া বাইক তৈরির সময় ফ্যাক্টরিতে কার্বুরেটর সিল করে দেওয়া হয়। সেই সিল একবার কাটলে ফের জোড়া লাগানোটাও কঠিন বটে। আর যদি সিলিং ঠিকঠাক না হয়, তাহলে বাতাস এবং ফুয়েল লিক করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে ইঞ্জিনের পারফরম্যান্সে। এমনকী বাইকের মাইলেজও কমে যেতে পারে।

মেকানিক যদি কার্বুরেটরের ফুয়েল মিক্সচারকে সঠিকভাবে সেট না করেন, তাহলে বাইক চলতে চলতে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে শুধু ইঞ্জিনের ক্ষতি হবে তাই নয়, মাঝরাস্তায় চালকের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে।

তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে কোন পরিস্থিতিতে কার্বুরেটর পরিস্কার করতে হয়?

বিশেষ পরিস্থিতিতে কার্বুরেটর পরিস্কার করতে হবে। যেমন- অনেক সময় ইঞ্জিন স্টার্ট করতে গিয়ে সমস্যা হয়। এটা কার্বুরেটরে ময়লা জমার কারণে হতে পারে। তখন পরিস্কার করতে হবে। আবার ফুয়েল লিক করলেও কার্বুরেটর খুলে মেরামত করতে হতে পারে। কার্বুরেটরের কারণে বাইকের কোনো অংশে সমস্যা হলেও একই কাজ করতে হবে। কিন্তু তার আগে নয়।

টুঁ হুইলার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইকের কার্বুরেটর শুধু তখনই খোলা উচিত, যখন সত্যিই কোনো সমস্যা হচ্ছে। সার্ভিসিংয়ের সময় কার্বুরেটর খুলে পরিস্কার করা অর্থহীন। এতে লাভ তো কিছু হবেই না, উল্টে ক্ষতি হতে পারে। বাইকের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়বে, মাইলেজ কমবে, এমনকি কার্বুরেটর চিরতরে খারাপও হয়ে যেতে পারে।

সূত্র: বাইকওয়ালা

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy