শীঘ্রই হন্ডা মোটর এবং নিসান মোটর মিশে যেতে পারে বলে খবর। ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিষয়ে জাপানের এই দুই গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার মধ্যে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। এই দুই বহুজাতিক সংস্থা যদি এক হয়, তাহলে জাপানের গাড়ি শিল্পে এক বড় পরিবর্তন আসবে এবং তারা টয়োটা মোটরকে কড়া চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হবে। শোনা যাচ্ছে, এই দুই সংস্থা মার্জ করে একটি নতুন হোল্ডিং কোম্পানি খুলবে। তবে ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্জ সংক্রান্ত আলোচনা এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে।
হন্ডা মোটরের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শিনজি আওয়ামা এই মার্জ সংক্রান্ত আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মার্জের আগে বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজিক অপশন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিসান ও হন্ডার মার্জের খবর প্রকাশ্যে আসতেই বুধবার জাপানি মার্কেটে নিশানের শেয়ার দর ২৪ শতাংশ বেড়েছে, যদিও হন্ডার শেয়ার দর ৩.৪ শতাংশ কমেছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে একটি নতুন হোল্ডিং কোম্পানি গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মিৎসুবিশি মোটরও এই ডিলে সামিল হতে পারে, কারণ মিৎসুবিশির সাথে নিসানের ইতিমধ্যেই ক্যাপিটাল সংযুক্তির চুক্তি রয়েছে। ওই ব্যক্তির মতে, আর কিছুদিনের মধ্যেই মার্জ সংক্রান্ত বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।
জাপানের বাজারে কী প্রভাব পড়বে?
হন্ডা ও নিসানের মধ্যে চুক্তি সফল হলে জাপানের গাড়ির বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। এর ফলে জাপানের গাড়ির বাজারে প্রতিযোগিতা মূলত দুটি সংস্থার মধ্যে হবে। একদিকে থাকবে টয়োটা এবং অন্যদিকে হন্ডা, নিসান এবং মিৎসুবিশি। বিশ্লেষকদের মতে, জাপানের বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গাড়ির বাজারেও জাপানি সংস্থার প্রভাব বাড়বে, বিশেষ করে ইলেক্ট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি)-র বাজারে। এই মার্জার সম্পন্ন হলে উৎপাদন ক্ষমতা এবং ক্যাপিটাল বাড়বে। এর ফলে টেসলা এবং চীনের সংস্থাগুলির সঙ্গে টক্কর দিতে সুবিধা হবে। গাড়ির শিল্পের বিশ্লেষক তাসুও ওয়াশিদা বলেছেন, ‘এই মার্জিং হলে নিসানের উপর থাকা অর্থনৈতিক চাপ অনেকটা কমবে।’
এই বছরের প্রথমার্ধে হন্ডা, নিসান এবং মিৎসুবিশির মিলিতভাবে ৪০ লক্ষ গাড়ি বিক্রি হয়েছে। একই সময়ে টয়োটার বিক্রি হয়েছে ৫২ লক্ষ গাড়ি। এই মার্জিং গাড়ির বাজারে টয়োটার প্রতাপে ভাগ বসাতে পারে এবং নিসানের অস্তিত্বের ক্ষেত্রেও তা সহায়ক হবে। যদিও এই দুই সংস্থার মিলিত মার্কেট ক্যাপিটালের থেকেও টয়োটার মার্কেট ক্যাপিটাল অনেক বেশি।
সংক্ষেপে, হন্ডা ও নিসানের সম্ভাব্য মার্জার জাপানের গাড়ি শিল্পে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে এবং টয়োটার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।