“উড়ে উড়ে যাওয়া যাবে গন্তব্যে”-বিশ্বের প্রথম উড়ুক্কু ট্যাক্সি সার্ভিস শুরু হচ্ছে কোথায়?

বিশ্বে প্রথমবারের মতো উড়ুক্কু ট্যাক্সি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০২৫ সালের শেষের দিকে প্রথম শহর হিসেবে আবুধাবিতে এ পরিষেবা চালুর লক্ষ্য রয়েছে দেশটির।

এ পরিষেবার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এয়ারক্রাফট কোম্পানি ‘আর্চার এভিয়েশন’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে নির্মিত বিদ্যুচ্চালিত ‘টেকঅফ-অ্যান্ড-ল্যান্ডিং বা ইভিটিওএল’ উড়ুক্কু ট্যাক্সির বহর দেখা যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।

পরিকল্পনা সফল হলে কোম্পানিটির ‘মিডনাইট’ নামের উড়ুক্কু ট্যাক্সি আবুধাবির আশপাশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ‘ভার্টিপোর্ট’ থেকে উড্ডয়ন বা অবতরণ করবে। ‘ভার্টিপোর্ট’ হচ্ছে এ ধরনের ট্যাক্সির এয়ারপোর্ট। চারজন যাত্রী নিয়ে পরিবহন করবে এসব উড়ুক্কু ট্যাক্সি, যা যাত্রার সময় কমিয়ে দেবে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত।

“আর্চার-এর লক্ষ্য হচ্ছে শহরে ভ্রমণের চেহারা পাল্টে দেওয়া অর্থাৎ গাড়িতে যাতায়াতে যেখানে ৬০-৯০ মিনিটের মতো সময় লাগে, উড়ুক্কু ট্যাক্সির মাধ্যমে এই সময় কমিয়ে ১০-২০ মিনিটের মধ্যে নিয়ে আসা। যা একইসঙ্গে নিরাপদ, টেকসই, কম শব্দের ও অন্যান্য পরিবহন খরচের সঙ্গেও প্রাসঙ্গিক,” বলেছেন আর্চারের এক মুখপাত্র।

“বাণিজ্যিক এয়ারক্রাফটের মতো একই স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে এসব উড়ুক্কু ট্যাক্সিতে। পাশাপাশি ক্রুজিং উচ্চতায় হেলিকপ্টারের শব্দ দূষণ ৯৯ শতাংশ কমিয়ে দেবে এসব ট্যাক্সি।”

পরিবহণের ভিন্ন ধারা হিসাবে ‘ইভিটিওএল’-এর ধারণাটি প্রথমবারে মতো ২০১৬ সালে নিজেদের ‘এলিভেট’ সম্মেলনে নিয়ে আসে আমেরিকান পরিবহন কোম্পানি উবার। ওই সময় বেশ জনপ্রিয়তা পায় ধারণাটি।

সে সময় এমন এক ভবিষ্যতের কল্পনা করেছিল জনপ্রিয় এই রাইড শেয়ারিং অ্যাপটি, যেখানে গ্রাহকরা গাড়ির রাইডের অর্ডার দেওয়ার মতোই উড়ুক্কু ট্যাক্সি অর্ডার করতে পারবেন। এরপর থেকে তৈরি হয়েছে ৩০০টিরও বেশি ‘ইভিটিওএল’ স্টার্টআপ।

কোম্পানিটি বলেছে, আবুধাবিতে নিজেদের প্রথম বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এই উড়ুক্কু ট্যাক্সি। ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার গতিতে যাত্রী বহন করবে মিডনাইট ট্যাক্সি। শহরের অন্যান্য অংশ ব্যবহারের পাশাপাশি যাত্রার বড় অংশ পানির উপর দিয়ে পেরিয়ে যাবে এটি।

‘আর্চার এভিয়েশন’-এর সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের চুক্তির মধ্যে রয়েছে আবুধাবি বিমানবন্দর, ইতিহাদ এভিয়েশন ট্রেনিং, জেনারেল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বা জিসিএএ, গ্লোবাল এয়ার নেভিগেশন সার্ভিসেস, গ্লোবাল অ্যারোস্পেস লজিস্টিকস ও ইন্টিগ্রেটেড ট্রান্সপোর্ট সেন্টার।

বাণিজ্যিক ও সরকারি সংস্থার মধ্যে এই সহযোগিতার মানে হচ্ছে অপারেশনাল ও বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সমস্যা উভয়ই একসঙ্গে সমাধান করা সম্ভব হবে।

“সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিরাপদ বিদ্যুচ্চালিত উড়ুক্কু ট্যাক্সি চালু করার ক্ষেত্রে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,” বলেছেন ‘জিসিএএর’-এর মহাপরিচালক সাইফ মোহাম্মদ আল সুওয়াইদি।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy