১৪০ কোটি মানুষের বাজার হাতছাড়া করা অসম্ভব! বিদেশ মন্ত্রীর আপত্তি উড়িয়ে ভারতের পাশেই দাঁড়ালেন লাক্সন।

ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) নিয়ে এবার নিজের মন্ত্রিসভার অন্দরেই প্রবল বিরোধের মুখে পড়লেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন। প্রধানমন্ত্রী লাক্সন এই চুক্তিকে তাঁর সরকারের ‘ঐতিহাসিক সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করলেও, তাঁরই বিদেশ মন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স একে ‘অন্যায্য’ এবং ‘নিউজিল্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর’ বলে তোপ দেগেছেন। শনিবার এক বিবৃতিতে লাক্সন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি এই চুক্তির বিরোধিতা নিয়ে কোনো কথাই শুনতে রাজি নন।
চুক্তির সাফল্য ও লাক্সনের অনড় অবস্থান প্রধানমন্ত্রী লাক্সন বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম প্রথম মেয়াদেই ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করব, এবং আমরা তা করে দেখিয়েছি।” তিনি মনে করেন, ১.৪ বিলিয়ন ভারতীয় ক্রেতার বিশাল বাজার নিউজিল্যান্ডের পণ্য রপ্তানি, নতুন কর্মসংস্থান এবং আয় বৃদ্ধিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। লাক্সন এই চুক্তিকে নিউজিল্যান্ডের ভবিষ্যতের জন্য একটি সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বিদেশ মন্ত্রীর বিস্ফোরক অভিযোগ অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ড ফার্স্ট পার্টির নেতা ও বিদেশ মন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স এই চুক্তির কড়া সমালোচনা করে একে ‘লো কোয়ালিটি’ বা নিম্নমানের চুক্তি বলে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ভারত ডেইরি বা দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর শুল্ক না কমালেও নিউজিল্যান্ড ইমিগ্রেশন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতকে ‘বিপজ্জনক ছাড়’ দিয়েছে। পিটার্স আরও জানান, তিনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর দলের আপত্তির কথা জানিয়েছেন।
কী আছে এই চুক্তিতে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ক্রিস্টোফার লাক্সনের মধ্যে আলোচনার পর গত ২২ ডিসেম্বর এই ঐতিহাসিক চুক্তির ঘোষণা করা হয়। চুক্তির প্রধান দিকগুলি হলো:
-
আগামী ১৫ বছরে ভারতে ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে নিউজিল্যান্ড।
-
আগামী ৫ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা।
-
নিউজিল্যান্ডের প্রায় ৯৫ শতাংশ পণ্যের ওপর ভারত শুল্ক কমাবে।
-
ভারতের আইটি ও প্রকৌশলী কর্মীদের জন্য নিউজিল্যান্ডের শ্রমবাজারে সহজ প্রবেশাধিকার।
নিউজিল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই নিয়ে শোরগোল চললেও, ভারত এই চুক্তিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজের অর্থনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছে।