শরণার্থী থেকে শাসকের রূপ? সিডনি হামলার পর উত্তাল ব্রিটেন-জার্মানি, অভিবাসীদের দেশছাড়া করার ডাক!

সিডনির হানুক্কা উৎসবে ইহুদিদের ওপর নির্বিচার গুলি চালনা থেকে শুরু করে আমেরিকার নিউ অরলিন্সে ট্রাক হামলা—২০২৫-এর শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে তথাকথিত ‘লোন উলফ’ বা একাকী হামলাকারী জঙ্গিরা। যে ইউরোপ একসময় শরণার্থীদের দু’হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছিল, আজ সেই ইউরোপের রাজপথই ‘অ্যান্টি-ইমিগ্রেশন’ বা অভিবাসী বিরোধী মিছিলে উত্তাল। ইসলামিক কট্টরপন্থা ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এখন পশ্চিমী দেশগুলোর অস্তিত্বের সংকটে পরিণত হয়েছে।

ইউরোপের ক্ষত: সংখ্যাতত্ত্বের ভয়াবহতা গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স ২০২৫-এর রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ সালের পর পশ্চিমী দেশগুলোতে ভয়াবহ হামলার সংখ্যা এখন সর্বোচ্চ। ১৯৭৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইউরোপে (রাশিয়া বাদে) ২০৯টি বড় হামলায় ৮০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্স একাই ৮৫টি হামলার শিকার। সিডনির বন্ডি বিচে ইহুদিদের লক্ষ্য করে হামলা বা ইংল্যান্ডে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর হিন্দুদের ওপর আক্রমণ—সবক্ষেত্রেই আঙ্গুল উঠছে কট্টরপন্থী অভিবাসীদের দিকে।

শরিয়া ও খিলাফতের দাবি: ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জার্মানির হামবুর্গে ২ হাজারেরও বেশি মুসলিম শরণার্থীর ‘শরিয়া আইন’ ও ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে র্যালি বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। সাহায্যপ্রার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া এই মানুষগুলো নাগরিকত্ব পেতেই মূল সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ব্রিটেন তো আরও একধাপ এগিয়ে; আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০৩৫ সালের মধ্যে সেখানে মুসলিম জনসংখ্যা ২৫ শতাংশে পৌঁছাবে। এর ফলেই ব্রিটেনের রাজপথে এখন লাখো মানুষের স্লোগান— “আমাদের দেশ ফিরিয়ে দাও।”

সহ্যের সীমা অতিক্রম: দেশে দেশে নিষেধাজ্ঞা স্পেনের জুমিলার মতো শহরগুলো এখন পাবলিক প্লেসে ইদ পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। বেলজিয়াম বা সুইডেনের মতো শান্ত দেশগুলোতেও রাস্তার ওপর নামাজ পড়ে শক্তিপ্রদর্শন আর স্থানীয়দের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ফেটে পড়ছে। ভারতের পহেলগামে ধর্ম জিজ্ঞেস করে গুলি চালানোর ঘটনাও মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়, বরং একটি কট্টরপন্থী মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই। সিডনি হামলার পর এই ঘৃণা ও অবিশ্বাসের বাতাবরণ যে সাধারণ ও নির্দোষ মুসলিমদের জীবনও আরও কঠিন করে তুলবে, তা বলাই বাহুল্য।