ওড়িশায় খুন মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিক, বাংলাদেশি সন্দেহে হত্যা বলছে তৃণমূল

বিজেপি শাসিত ওড়িশায় ফের আক্রান্ত বাঙালি। ওড়িশার সম্বলপুরে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে এক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। মৃতের নাম জুয়েল রানা (৩০)। এই ভয়াবহ হামলায় আরও দুই বাঙালি শ্রমিক গুরুতর জখম হয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওড়িশা ও বাংলার রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা জুয়েল রানা, আকির শেখ এবং পলাশ শেখ গত ২০ ডিসেম্বর কাজের সন্ধানে সম্বলপুরে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে একদল দুষ্কৃতী তাঁদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। ‘বাংলাদেশি’ গুজব ছড়িয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। আকির ও পলাশ কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালালেও উন্মত্ত জনতার হাতে ধরা পড়ে যান জুয়েল। তাঁকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য ওড়িশার বিজেপি সরকারকে সরাসরি দায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখা হয়েছে, “বিজেপি যে বাঙালি বিদ্বেষী তা ফের প্রমাণিত। অনুপ্রবেশকারী না হওয়া সত্ত্বেও একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাভাষী ভারতীয়দের বহিরাগত ও সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করার এই নোংরা রাজনীতি আমরা মেনে নেব না।”
রাজ্যসভার সাংসদ তথা পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “বিজেপি আর কতজন নিরীহ বাঙালির প্রাণ চায়? বিজেপি শাসিত রাজ্যে বারবার কেন বাঙালিরাই আক্রমণের শিকার হচ্ছে?” তৃণমূলের দাবি, স্রেফ বাঙালি হওয়ার কারণেই এই লাঞ্ছনা ও মৃত্যু। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে মুর্শিদাবাদের পরিবারগুলোও। কর্মসংস্থানের খোঁজে ভিন রাজ্যে গিয়ে এভাবে প্রাণ হারানোয় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।