“আগুন আমাদের ঘিরে ফেলেছিল, দরজা খোলার উপায় ছিল না!” কর্নাটকের বাস দুর্ঘটনায় অলৌকিক ভাবে বেঁচে ফেরা আদিত্যর বয়ান

বৃহস্পতিবার রাত ২টো ০৫ মিনিট। বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণগামী ৩২ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস যখন হিরিউরের কাছে পৌঁছায়, ঠিক তখনই বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ডিজেল ট্যাঙ্কার ডিভাইডার টপকে সজোরে ধাক্কা মারে বাসটিতে। মুহূর্তের মধ্যে বাসে আগুন ধরে যায়। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৬ জনের জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিত্য নামে এক যাত্রী জানান, “ধাক্কা লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যেই চারপাশ থেকে আগুন আমাদের ঘিরে ফেলে। দরজা জ্যাম হয়ে গিয়েছিল, খোলার কোনো উপায় ছিল না।”

আদিত্য আরও জানান, প্রাণের দায়ে যাত্রীরা বাসের জানলার কাচ ভেঙে বাইরে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। চারদিকে তখন শুধু মানুষের চিৎকার। সেই হাড়হিম করা দৃশ্যের সাক্ষী ছিলেন পিছনের বাসের এক চালকও। তিনি জানান, ঘাতক ট্যাঙ্কারটি সরাসরি বাসের ডিজেল ট্যাঙ্কে ধাক্কা মারায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই চালক নিজের চেষ্টায় সাতজনকে উদ্ধার করলেও এক শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চোখের সামনে পুড়ে খাক হয়ে যায় এক দম্পতি তাঁদের কোলের সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মা চিৎকার করতে করতে জ্বলন্ত বাসের ভিতর ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু লেলিহান শিখার তীব্রতায় কেউ কাছে ঘেঁষতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্যাঙ্কারের চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়ার কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। ওই বাসের ঠিক পিছনেই ছিল স্কুল পড়ুয়াদের একটি বাস। সৌভাগ্যবশত সেই বাসটির চালক তৎপরতার সঙ্গে গাড়িটিকে সরিয়ে নেওয়ায় বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ট্যাঙ্কারের চালকও, যাঁর দগ্ধ দেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় গোটা কর্নাটক জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Dipak Barman01
  • Dipak Barman01