১৭ বছরের নির্বাসন শেষ, সপরিবারে বাংলাদেশে তারেক রহমান! বিমানবন্দরে বাঁধভাঙা ভিড়, নয়া সমীকরণের মুখে ঢাকা

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর ২০২৫) সপরিবারে বাংলাদেশে ফিরে এলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এদিন দুপুর ১১টা ৪০ মিনিটে স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এর আগে তাঁর বিমানটি সিলেটে সংক্ষিপ্ত যাত্রা বিরতি করেছিল। দীর্ঘ দেড় যুগ পর প্রিয় নেতাকে সামনে পেয়ে বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট পর্যন্ত রাজকীয় সংবর্ধনা দেন লক্ষ লক্ষ দলীয় কর্মী-সমর্থক।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। তারেক রহমান জুতো খুলে ঘাসের ওপর দাঁড়িয়ে একমুঠো মাটি হাতে তুলে নেন, যা তাঁর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী প্রকাশ হিসেবে দেখছেন সমর্থকরা। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ তারিখে নির্ধারিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৫০ দিন আগে তাঁর এই ফেরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় এনে দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সমঝোতা ও আইনি বাধা দূর হওয়ার পরই এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন সম্ভব হলো।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের এই ফেরা ভারতের জন্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও অতীতে বিএনপির সঙ্গে নয়াদিল্লির তিক্ততা ছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলটি ভারত-বিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও ধর্মীয় উগ্রবাদের আশঙ্কার মধ্যে ভারত বিএনপিকে একটি ‘উদার ও গণতান্ত্রিক’ বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে। বিকেলে এক জনসভায় তারেক রহমান স্পষ্ট বার্তা দেন, “আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই নিরাপদে থাকবে।” তাঁর এই ‘পিস মডেল’ আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে কতটা এগিয়ে দেয়, এখন সেটাই দেখার।