বাংলার বুকেই লুকিয়ে এক ‘মিনি ইন্ডিয়া’! জঙ্গলমহলের এই শহরের রহস্য জানলে চমকে যাবেন

উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম—সারা ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মেলবন্ধন দেখতে হলে আপনাকে আসতে হবে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল ঘেরা শহর খড়্গপুরে। ছোট্ট এই রেল শহরটি আজ সারা বিশ্বের কাছে এক টুকরো ‘মিনি ইন্ডিয়া’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কেন এই তকমা? কেনই বা ভারতবর্ষের আর কোনো শহর নয়, খড়্গপুরকেই বেছে নেওয়া হলো এই বিশেষ সম্মানের জন্য?

খড়্গপুরের এই বিচিত্র ইতিহাসের মূলে রয়েছে ভারতীয় রেল। কয়েক দশক আগে যখন ‘বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে’ (BNR)-এর যাত্রা শুরু হয়, তখন কাজের সুবাদে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে এসে বসতি গড়েন। উত্তর ভারতের হিন্দিভাষী থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভারতের তামিল বা তেলুগু, আবার ওড়িশা কিংবা পশ্চিম ভারতের মানুষ—সবাই মিলে মিশে এই শহরকে করে তুলেছেন এক কসমোপলিটান জংশন। বংশপরম্পরায় তাঁরা আজ খড়্গপুরেরই স্থায়ী বাসিন্দা। কেউ যুক্ত রেলে, কেউ আবার বড় ব্যবসায়।

খড়্গপুরে পা রাখলে আপনি একই সঙ্গে দেখতে পাবেন ওড়িয়া রীতির অনুষ্ঠান, দক্ষিণ ভারতের পোঙ্গল, উত্তর ভারতের রামনবমী কিংবা মাতা পুজো। ভাষার কোনো প্রাচীর নেই, ধর্মের কোনো বিভেদ নেই। সুদীর্ঘ রেল স্টেশন, এশিয়ার অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি (IIT), বায়ুসেনার বিমান ঘাঁটি এবং বিশাল হাসপাতাল—সব মিলিয়ে খড়্গপুর যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ এক মহানগরী। বিচিত্র রুচি, বিচিত্র আচার আর মিশ্র সংস্কৃতির এই শহর আজও বহন করে চলেছে ভারতের ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’-এর এক জীবন্ত নিদর্শন।

Dipak Barman01
  • Dipak Barman01