একক চেষ্টায় গ্রামের ভোলবদল! হাওড়ার এক সাধারণ গ্রামকে ‘শিক্ষার মক্কা’ বানালেন সন্তোষ দাস

হাওড়া জেলার পাঁচলা ব্লকের এক প্রান্তিক গ্রাম গঙ্গাধরপুর। কয়েক দশক আগেও যে গ্রামের পরিচয় ছিল কেবল কৃষি আর শ্রমিক শ্রেণির মানুষের লড়াই। শিক্ষার আলো সেখানে ছিল ক্ষীণ, উচ্চশিক্ষার জন্য শহর বা পাশের ব্লকে যাওয়া ছিল বিলাসিতা। সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রামকে আজ উচ্চশিক্ষার এক অনন্য পীঠস্থানে পরিণত করেছেন শিক্ষাবিদ তথা প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ কুমার দাস। তাঁর হাত ধরেই গঙ্গাধরপুর আজ জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
সন্তোষবাবুর লড়াই শুরু হয়েছিল ১৯৬৪ সালে। তিনি বিশ্বাস করতেন, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির মূল চাবিকাঠি হলো স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষা। সেই চিন্তা থেকেই প্রতিষ্ঠা করেন ‘গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির’। এরপর একে একে স্থাপন করেন বালিকা বিদ্যালয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষার জন্য গ্রামের পড়ুয়াদের কলকাতা বা হাওড়া শহরে যাওয়ার কষ্ট দেখে তিনি দমে যাননি। প্রতিষ্ঠা করেন ‘গঙ্গাধরপুর মহাবিদ্যালয়’। এরপর বি.এড (B.Ed), ডি.এল.এড (D.El.Ed) এবং এম.এড (M.Ed) কলেজ গড়ে তুলে উচ্চশিক্ষার পথকে সুগম করেন। এখন তাঁর লক্ষ্য গঙ্গাধরপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা।
যে গ্রামে একসময় মাধ্যমিক পাশ করা পড়ুয়া খুঁজে মেলা ভার ছিল, আজ সেই গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে উচ্চশিক্ষিত যুবক-যুবতী। সন্তোষ কুমার দাসের এই মহৎ কর্মযজ্ঞ কেবল শিক্ষার হার বাড়ায়নি, তৈরি করেছে বহু মানুষের কর্মসংস্থানও। আজ জেলা ও রাজ্যের বাইরে থেকেও শিক্ষার্থীরা এখানে ভিড় করে। গঙ্গাধরপুর আজ আর কেবল একটি গ্রাম নয়, এটি সন্তোষ দাসের স্বপ্ন আর হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সাফল্যের এক জীবন্ত আখ্যান।