বাবার সঙ্গে একই ক্লাসে আইন পড়তেন অটলজি! ১০১তম জন্মবার্ষিকীতে জানুন ভারতের ‘ভীষ্ম পিতামহ’-র ১০টি অজানা তথ্য

আজ ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫। সারা দেশ পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা ভারতরত্ন অটল বিহারী বাজপেয়ীর ১০১তম জন্মবার্ষিকী। ১৯২৪ সালের আজকের দিনেই মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে জন্ম হয়েছিল এই মহান রাষ্ট্রনায়কের। ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে যাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে তাঁর অসামান্য পাণ্ডিত্য, বাগ্মিতা এবং কূটনৈতিক দক্ষতার জন্য। কবি-হৃদয় এই মানুষটি কেন আজও আপামর ভারতবাসীর কাছে আইকন, তাঁর জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক সেই রোমহর্ষক কাহিনী।
অটলজি ছিলেন এক বিরল ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন সাংসদ। তিনি ৯ বার লোকসভা এবং ২ বার রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার স্বল্প মেয়াদে এবং পরবর্তীতে ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জোট রাজনীতি সামলে একটি স্থিতিশীল সরকার উপহার দেওয়া ছিল তাঁর বড় কৃতিত্ব।
অটলজির জীবনের ১০টি বিস্ময়কর তথ্য যা আপনাকে অবাক করবে:
বাবার সঙ্গে একই ক্লাসে পড়াশোনা: কানপুরের ডিএভি কলেজে অটলজি যখন আইন পড়তে যান, তাঁর পড়াশোনার প্রতি টান দেখে তাঁর বাবাও উৎসাহিত হন। মজার বিষয় হলো, দুজনে একই ক্লাসে সহপাঠী হিসেবে আইনের ডিগ্রি নিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রসংঘে প্রথম হিন্দি: ১৯৭৭ সালে তিনিই প্রথম ভারতীয় নেতা যিনি রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে হিন্দিতে ভাষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের মাতৃভাষার সম্মান বাড়িয়েছিলেন।
৪ রাজ্যের সাংসদ: এটি একটি বিরল রেকর্ড। অটলজি একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাট থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
পোখরানের সাহস: ১৯৯৮ সালে পোখরানে পরমাণু পরীক্ষা চালিয়ে বিশ্বকে ভারতের শক্তি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন অটল।
সংবাদকর্মী থেকে রাষ্ট্রনায়ক: তিনি একজন তুখোড় সাংবাদিক ছিলেন এবং ‘পাঞ্চজন্য’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
খাদ্যরসিক অটলজি: রাজনীতির বাইরে তিনি ছিলেন চরম ভোজনরসিক। নতুন শহরে গেলেই সেখানকার জনপ্রিয় খাবারের স্বাদ নিতেন তিনি।
অস্ত্রোপচারের পাহাড়: তাঁর শরীর নিয়ে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছিল। মাত্র ২০ বছরের ব্যবধানে মোট ১০ বার তাঁকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে বসতে হয়েছিল।
শান্ত স্বভাব: তিনি সহকর্মীদের ওপর কখনো চিৎকার করতেন না। তাঁর চোখের চাহনি আর মুখের অভিব্যক্তি দেখেই সবাই বুঝে যেতেন তিনি কী বলতে চাইছেন।
ভীষ্ম পিতামহ: বিরোধীরাও তাঁকে ‘ভারতীয় রাজনীতির ভীষ্ম পিতামহ’ বলে সম্মান করতেন।
কবিতার প্রতি টান: মহাত্মা রামচন্দ্র বীরের কবিতা তাঁর জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল, যা তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাধারাতেও প্রতিফলিত হত।
২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট তিনি চিরবিদায় নেন। কিন্তু আজও ‘সুশাসন’ এবং ‘সুমৈত্রী’-র প্রতীক হিসেবে অটল বিহারী বাজপেয়ীর আদর্শ ভারত গঠনে আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।