মমতার চতুর্থবার শপথের পর কী হবে? বড়সড় রহস্য জিইয়ে রাখলেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, জল্পনা তুঙ্গে!

নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলার রাজনীতির অলিন্দ। তবে এবারের উত্তাপ কোনো বিরোধী শিবিরের আক্রমণ থেকে নয়, বরং খোদ শাসকদলের এক হেভিওয়েট মন্ত্রীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। বুধবার বিকেলে রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গণে ‘বাংলা সঙ্গীত মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল চাঁদের হাট। কিন্তু সেই সঙ্গীতের সুর ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠল রাজনীতির এক ‘বেসুরো’ ইঙ্গিত। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের একটি মন্তব্য ঘিরেই এখন রাজ্য রাজনীতিতে হাজারো প্রশ্নের পাহাড়।

মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইন্দ্রনীল সেন বলেন, “চার-পাঁচ মাস পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। তারপর তিনি যদি আমাকে এই দায়িত্বে রাখেন, তবে আমি তো কাজ করবই। কিন্তু যদি দায়িত্ব না-ও রাখেন, তবে আমি এখন থেকেই অনুরোধ করছি যে এই অনুষ্ঠানের কার্টেন রেজার আগামী বছর থেকে যেন আরও বড় করে অন্যভাবে হয়। আমি এই দপ্তরে মন্ত্রী হিসেবে থাকি বা না থাকি, শিল্পী হিসেবে অবশ্যই আপনাদের সাথে থাকব।”

মন্ত্রীর এই ‘থাকা’ বা ‘না থাকা’র জল্পনা ঘিরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক মুখে কেন এমন বৈরাগ্যের সুর শোনা গেল মন্ত্রীর গলায়? তবে কি দলের অন্দরে কোনো চোরা স্রোত বইছে? নাকি মন্ত্রিত্ব পাওয়ার ব্যাপারে তিনি নিজেই খুব একটা নিশ্চিত নন?

ইন্দ্রনীল সেনের রাজনৈতিক গ্রাফ বেশ চমকপ্রদ। বাম আমলে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে পরিচিত থাকলেও, তৃণমূলের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। লোকসভা নির্বাচনে পরাজয় সত্ত্বেও দল তাঁর ওপর ভরসা হারায়নি। চন্দননগর থেকে বিধানসভা ভোটে জেতার পর তাঁকে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই ‘ঘনিষ্ঠ’ মন্ত্রীর মুখ থেকেই এমন মন্তব্য শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

উল্লেখ্য, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত শহরের ১০টি জায়গায় ‘বাংলা সঙ্গীত মেলা’ চলবে। কিন্তু উৎসবের আনন্দের মাঝে ইন্দ্রনীল সেনের এই রাজনৈতিক ‘ইঙ্গিত’ এখন বড় হেডলাইন। তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে এই বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে নির্বাচনের আগে মন্ত্রীর এই মন্তব্য যে বিরোধীদের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল, তা বলাই বাহুল্য।