মাহসা আমিনির স্মৃতি ফিরল তেহরানে! হিজাব আইন প্রয়োগে হিমশিম খাচ্ছে ইরান সরকার, নেপথ্যে বড় ভয়

ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর সাম্প্রতিক এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ইরানের এক অভূতপূর্ব চিত্র। ইরান সরকার সে দেশে হিজাব নীতি কঠোরভাবে কার্যকর করার মরিয়া চেষ্টা চালালেও, তেহরান থেকে শিরাজ— সর্বত্র মহিলারা এখন প্রকাশ্য বিদ্রোহের পথ বেছে নিয়েছেন। ধর্মীয় পুলিশের সতর্কতা এবং কড়া আইনের তোয়াক্কা না করেই শত শত নারী হিজাব ছাড়াই রাস্তায় বের হচ্ছেন এবং সেই সাহসী মুহূর্তের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিচ্ছেন।

২০২৪ সালে ইরানে কার্যকর হওয়া ‘হিজাব ও বিনয়’ আইনে হিজাব না পরা বা ‘অনুপযুক্ত’ পোশাকের জন্য ভারী জরিমানা, প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত এবং দীর্ঘ কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রশাসন এখন বড় ধরনের গণ-গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছে। গোয়েন্দা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকার ভয় পাচ্ছে যে ২০২২ সালের মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর যে গণ-অভ্যুত্থান দেশ কাঁপিয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট, জলের অভাব এবং আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে নারীদের ওপর অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে খামেনেই প্রশাসন।

এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এর কোনো নির্দিষ্ট নেতা বা সংগঠন নেই। একদম তৃণমূল স্তর থেকে সাধারণ কিশোরী এবং তরুণীরাই এই প্রতিরোধের মশাল বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি ইরানে নারীদের মোটরসাইকেল চালানোর লাইসেন্স দেওয়া না হলেও, নারী মোটরসাইকেল ক্লাবগুলো এখন প্রকাশ্য রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, ইরান সরকার প্রশাসনিকভাবে দেশজুড়ে এই আইন কার্যকর করার ক্ষমতা হারিয়েছে। নারীদের এই অদম্য সাহস এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে মৌলবাদী প্রশাসন।